পাবনা থেকে ঢাকায় আসতে শেষ ৮ দিনের আয়

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-28 15:14:01

কালাম শেখ। রাজধানীর মিরপুরের একটা বাড়ির দারোয়ানের চাকরি করেন ৬ বছর ধরে। বেতন সাড়ে ৮ হাজার টাকা। স্ত্রীসহ সেখানেই থাকেন। তিন দিনের ছুটি নিয়ে স্ত্রীসহ গ্রামের বাড়ি পাবনা যান। এর মধ্যে করোনার বিস্তার রোধে সারা দেশের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন করা হয় রাজধানীর ঢাকার যোগোযোগ। ফলে ছুটি শেষ হলেও ঢাকায় ফিরতে পারছিলেন না তিনি। তবে চাকরি বাঁচাতে যেকোনো উপায়ে তাকে ঢাকা আসতে হবে।

পাঁচবার গাড়ি পাল্টিয়ে আজ (২৪ জুন) ঢাকায় এসেছেন কামাল শেখ। স্ত্রীসহ তার গাবতলী পর্যন্ত আসতে গাড়ি ভাড়া দিতে হয়েছে ২১০০ টাকা। প্রায় ৮ দিনের আয় শেষ। গাবতলী থেকে পাবনা যেতে আগে ভাড়া লাগত ৩০০ টাকা থেকে সাড়ে তিনশো টাকা।

গাবতলী বাস টার্মিনালে কামালের সঙ্গে কথা হয়। তিনি আক্ষেপ করে বার্তা২৪.কম-কে বলেন, সরকার লকডাউন দিয়েছে। রাস্তায় গাড়ি বন্ধ। কিন্তু আমরা চলাচল করবো কীভাবে? আমাদের তো চলতে হবে, কাজ করতে হবে। লকডাউন দেওয়ার আগে আমাদের কথা তো একবারও ভাবেনি। ভাবলে কী আমাদের এতগুলি টাকা খরচ হত? এই গরমের মধ্যে ভোগান্তির কথা তো বাদই দিলাম।

বাসে  গাদাগাদি করে লোক উঠছে

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় ঢাকাকে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ জুন) থেকে রাজধানীর আশপাশের সাতটি জেলায় কঠোর লকডাউন চলছে। চলবে আগামী ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত। সারাদেশ থেকে রাজধানীকে বিচ্ছিন্ন রাখতেই সরকারের এই পদক্ষেপ।

লকডাউনের ফলে ঢাকার সঙ্গে আশপাশের জেলা সমূহের গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। গণপরিবহন বন্ধ করেও আটকানো যায়নি জনস্রোত। নানা উপায়ে মানুষ ঠিকই ঢাকা ছাড়ছেন। আবার নানা উপায়ে ঢাকায় ফিরছেন।

গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে না গেলেও মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও মোটরবাইক যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে। ভাড়া কয়েকগুণ বেশি। গাবতলী থেকে মোটরসাইকেলে পাটুরিয়া ফেরিঘাট যেতে জনপ্রতি ভাড়া লাগছে ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা। তবে মোটরসাইকেল দুইজন গেলে জনপ্রতি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা লাগছে। প্রাইভেটকারে লাগছে ৫০০ টাকা। ট্রাকেও যাত্রী পরিবহন করছে।

গাবতলীতে এসে গাড়ি না পেয়ে হেঁটেই সামনের দিকে এগোচ্ছেন

গাবতলী থেকে বাস না থাকলেও আমিনবাজর ব্রিজ পার হলেই মিলছে বাস। সারি সারি বাস দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছে। সরজমিনে দেখা যায় গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে পায়ে হেঁটে ব্রিজ পার হয়ে বাসে উঠছে। এসব বাস সাভার, নবীনগর, মানিকগঞ্জের বারবারি পর্যন্ত যাচ্ছে। তারপর গাড়ি পাল্টিয়ে আবারও গাড়িতে উঠছে এসব যাত্রীরা।

২১ জুন করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার ঢাকার আশপাশের চারটিসহ সাতটি জেলায় লকডাউন ঘোষণা করে। এই সাত জেলায় লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই ঢাকার সঙ্গে সারাদেশে দূরপাল্লার বাস ও সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে রাজধানীতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন, শপিংমল খোলা রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর