পর্যটক বাড়লেও থানচিতে আবাসন সুবিধা বাড়েনি

চট্টগ্রাম, জাতীয়

নুসিং থোয়াই মারমা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 12:30:51

বান্দরবান সদর থেকে প্রায় ৮৫ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে যেতে হয় জেলার একটি দুর্গম এলাকা থানচি উপজেলায়। নীল দিগন্ত, নীলগীড়ি, চিম্বুক পাহাড়, ডিম পাহাড়, নাফাকুম, রেমাক্রি, বংড,  বড় পাথরসহ নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ‌উপভোগের জন্য দেশ-বিদেশ থেকে আশা হাজারও পর্যটক  ভিড় জমায় থানচিতে।

পর্যটন কেন্দ্রের এসব নদী, পাহাড়, ঝরনা, আকর্ষণীয় প্রাচীন স্থান দেখে মুগ্ধ হন দর্শনার্থীরা। বাংলাদেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ভ্রমণ পিপাসুদের কাঙ্ক্ষিত পর্যটন এলাকা হলেও থানচিতে ভালো ও পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা নেই। এ কারণে সারাদিন বেড়ানোর পর ক্লান্ত শরীর নিয়েও বান্দরবান জেলা সদরে ফিরে আসতে হয় দেশ-বিদেশ থেকে আশা পর্যটকদের।

থানচিতে বেড়াতে আশা একদল পর্যটক বার্তা২৪.কম প্রতিবেদককে জানান,  রেমাক্রি বাজার থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা পায়ে হেঁটে নাফাকুম পর্যটন কেন্দ্রে গিয়েছিলেন তারা। ঘণ্টাখানেক ঘোরাঘুরির পর আবারও আড়াই ঘণ্টা হেঁটে রেমাক্রি বাজারে পৌঁছাতে হয়। সেখানে বাধ্য হয়ে পাহাড়িদের মাচাং ঘরে বিশ্রাম নিতে হয়। পরদিন ভোরে বান্দরবান সদরে ফিরে আসেন।

তাদের কথায় বোঝা গেল আবাসিক ব্যবস্থা ভালো হলে সেখানে বিশ্রাম নেওয়া যেতো, যা তাদের এ ভ্রমণকে আরও আনন্দদায়ক করে তুলত।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা বার্তা২৪.কমকে জানান, থানছি উপজেলা পর্যটন নগরী হলেও এক সময় বান্দরবান জেলা সদর থেকে গাড়ি-ঘোরার যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না থাকায় ভ্রমণপিপাসুরা আসতে পারত না।

২০১২ সালের ১৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাঙ্গু নদীর ওপর নতুন সেতু উদ্বোধন করার পর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়। ফলে থানচিতে পর্যটকরা আসতে শুরু করেন। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর একসময় অবহেলিত দুর্গম এই উপজেলার আধুনিকায়ন হয়েছে। তবে ভালো আবাসন থাকলে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, থানছি উপজেলাটি এখন আর আগের মতো দুর্গম নয়। সড়ক পথে বান্দরবান থেকে তিন ঘণ্টায় এ উপজেলায় পৌঁছানো যায়। কিন্তু ভালো আবাসনের অভাবে অনেকেই ঘুরতে এসে না থেকে চলে যায়। একটু উন্নত থাকার ব্যবস্থা হলে পর্যটক বাড়তো, একইসঙ্গে উপজেলার উন্নয়ন হতো।

থানছি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মি.ক্যহ্লাচিং মারমা বার্তা২৪.কমকে জানান, পর্যটন মৌসুম প্রায় চলে এসেছে। এজন্য থানচি উপজেলায় পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য উপজেলা প্রশাসন কাজ করছে। পাঁচতলা আবাসিক হোটেল নির্মাণ ও দুটি রেস্টহাউজ সংস্কার ও একটি রেস্টহাউজ নির্মাণের কাজ চলছে। উপজেলা পরিষদের চারতলায় পর্যটকদের জন্য বরাদ্দ কক্ষও আছে।

থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করছি। বাজারের রেস্টহাউজ ও ইউনিয়ন পরিষদের রেস্টহাউজ পূর্ণ-সংস্কার করা হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে বাজারে ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি পাঁচতলা আবাসিক হোটেলের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এখানে প্রায় ২৪টির মতো কক্ষ থাকবে। উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে তৈরি হচ্ছে বাজার শেড কাম রেস্টহাউজ। সেখানেও পর্যটকরা থাকতে পারবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর