গণমাধ্যম নিবন্ধনের বিধান রেখে সম্প্রচার আইন অনুমোদন

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 14:37:11

ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যমের নিবন্ধন পাওয়ার বিধান রেখে সম্প্রচার আইন ২০১৮ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার (১৫ অক্টোবর) সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভায় এ আইনের অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

তিনি জানান, এ আইনে নিবন্ধন দেওয়ার জন্য একটি কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। কমিশনের কার্যাবলিতে কমিশনের কাজের মধ্যে রয়েছে, সম্প্রচার মাধ্যমকে শক্তিশালী ও গতিশীল করা এবং সম্প্রচার মাধ্যমের মানের উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা, সম্প্রচার মাধ্যমে মতপ্রকাশ ও সম্প্রচারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক রীতি ও মানদণ্ড অনুসরণ, সম্প্রচারের ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে কার্যক্রম পরিচালনা ও প্রতিযোগিতা, নতুন লাইসেন্স বা নিবন্ধন প্রদানের জন্য নির্দেশনা প্রদান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এ আইনে অনলাইন গণমাধ্যমের লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে কমিশনের একক কর্তৃত্ব থাকবে। তারা যে সুপারিশ করবে সেই সুপারিশ চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

শফিউল আলম জানান, এ আইনে অনেকগুলো সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। অনলাইন গণমাধ্যম, কমিশনের সংজ্ঞা এবং সম্প্রচার বলতে কী বোঝায় তা ধারা ২ এর ১৭ তে বলা হয়েছে। কমিশন গঠনের প্রস্তাবটি এ আইনের ৬ ধারায় দেওয়া আছে।  কমিশন হবে ৭ সদস্যের। আইনের ৭ ধারায় কমিশন গঠনের জন্য একটি সার্চ কমিটির প্রস্তাব করা হয়েছে। ৫ সদস্য বিশিষ্ট এ সার্চ কমিটি কমিশনের সদস্য কারা হবে তা লিখিত আকারে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে। রাষ্ট্র্রপতি তাদের মধ্যে থেকে একজন চেয়ারম্যানসহ ৭ সদস্যের একটি কমিশন তৈরি করে দেবেন। তাদের মধ্যে একজন নারী কমিশনার থাকবেন।

তিনি জানান, আইনের ৮ ধারায় কমিশনের সদস্যদের যোগ্যতার বিষয়ে বিস্তারিত বলা হয়েছে। তাদের যোগ্যতার মধ্যে রয়েছে, প্রথমত তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। কোন প্রকার জনপ্রতিনিধি এ কমিশনের সদস্য হবেন না। কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণখেলাপি ঘোষিত হলে তিনি এ কমিশনের সদস্য হবেন না। দেউলিয়া বা স্খলনজনিত কোন দায়ে দায়ী হলে তিনি এ কমিশনের সদস্য হবে না। আদালত কর্তৃক দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে কেউ এ কমিশনের সদস্য হতে পারবে না। প্রজাতন্ত্রের কোনো লাভজনক পদে থাকেন তাহলে তিনিও এ কমিশনের সদস্য হবেন না। গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট কোন ব্যবসা বা কোন প্রকার সম্প্রচার সংশ্লিষ্ট কাজে  জড়িত থাকেন তাহলে তিনি এ কমিশনের সদস্য হতে পারবেন না।

তিনি জানান, কমিশনের সদস্য হবার ক্ষেত্রে যোগ্যতার বিষয়ে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। চেয়ারম্যান যিনি হবে তিনিও একই যোগ্যতার অধিকারী হতে হবে। পদে মেয়াদের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে তাদের নিয়োগের তারিখ হতে ৫ বছর বা তার নিজের ৭০ বছর পর্যন্ত কাজ করতে পারবেন।

শফিউল আলম জানান, এ আইনের ১০ ধারায় কমিশনারদের অপসারণের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে তাদের শারিরিক বা মানসিকভাবে দায়িত্ব পালনে যদি অসামর্থ্য হোন, রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর এমন কোনো কাজে লিপ্ত থাকেন তাহলে তাকে কমিশনার পদ থেকে অপসারণ করা যাবে। কমিশনের সভার ক্ষেত্রে ৩জন উপস্থিত হলে কোরাম হবে।

অনলাইন গণমাধ্যম বলতে বাংলাদেশের ভূখণ্ড হইতে হোস্টিংকৃত বাংলা, ইংরেজি বা অন্যকোন ভাষায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইন্টারনেট ভিত্তিক রেডিও বা টেলিভিশন সংবাদপত্র বা ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যম সম্প্রচারের উদ্দেশ্যে স্থির ও চলমান চিত্র, ধ্বনি ও লেখা বা মাল্টিমিডিয়ার অন্যকোনো রুপে উপস্থাপিত তথ্য উপাত্ত্ব প্রকাশ বা সম্প্রচারকারী বাংলাদেশি নাগরিক বা বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান।

আইনে বলা হয়েছে বিদ্যমান যেসব গণমাধ্যম চালু রয়েছে তারা এ আইনের আওতায় পড়বে না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর