ক্যাটল স্পেশাল ট্রেনে সরকারের ক্ষতি লাখ টাকা

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী | 2023-08-29 00:41:38

রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কোরবানির পশু ঢাকায় নিতে চালু করা হয়েছিল ‘ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন’। সেই ট্রেনে ব্যবসায়ীদের সাড়া মেলেনি। ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী রুটে তিন দিন চলার কথা থাকলেও শেষদিন কোন বুকিংই হয়নি। ফলে কথা থাকলেও শেষদিন ট্রেনটি ঢাকা যেতে পারেনি।

ট্রেনটি গত ১৭ ও ১৮ জুলাই কোরবানির পশু পরিবহন করে। এর আগে এই একই ট্রেন আম পরিবহন করত। তখন এর নাম ছিল ‘ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন’। আম পরিবহনে কিছুটা সাড়া মিললেও পশু পরিবহনে সাড়া পায়নি রেলওয়ে। দুদিন ট্রেনটি চলার কারণে সরকারের ক্ষতি হয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উদ্বোধনের দিন ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ৪টি ওয়াগনে ৮০টি গরু নিয়ে যায়। এতে রেলওয়ের আয় হয় ৪৭ হাজার ৩২০ টাকা। সেদিন রাজশাহী থেকে ১টি ওয়াগনে ২০টি গরু যায় ঢাকায়। এতে রেলওয়ের আয় ১১ হাজার ৮৩০ টাকা। এ ছাড়া সেদিন বড়াল ব্রিজ স্টেশন থেকে ১টি ওয়াগনে ১০০টি ছাগল নিয়ে যাওয়া হয়। এতে রেলওয়ে ভাড়া পায় ৯ হাজার ২৩০ টাকা। প্রথম দিন রেলওয়ের ট্রেনটি থেকে আয় ৬৮ হাজার ৩৮০ টাকা।

দ্বিতীয় দিন ১৮ জুলাই রাজশাহী থেকে ১টি ওয়াগনে ১৪টি গরু ও ৬টি ছাগল নিয়ে যাওয়া হয়। এতে ভাড়া আসে ১১ হাজার ৮৩০ টাকা। সেদিন রাজশাহীর বাঘার আড়ানী স্টেশন থেকে একটি ওয়াগনে ২০টি ছাগল ওঠে। এতে রেলওয়ের আয় হয় ১১ হাজার ৮৩০ টাকা। দ্বিতীয় দিন মোট ১৪টি গরু ও ২৬টি ছাগল পরিবহনে রেলওয়ের আয় হয় ২৩ হাজার ৬৬০ টাকা। দুই দিনে মোট আয় ৯১ হাজার ৯৮০ টাকা। অথচ ট্রেনটি একবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা যাওয়া এবং ফিরে আসায় সরকারের খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা। দুইদিনে খরচ দুই লাখ। ফলে ক্যাটল ট্রেনে সরকারের ক্ষতি এক লাখ টাকা।

খামারি এবং ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ট্রেনে পশু পরিবহনে ভোগান্তি বেশি। ট্রেনে পশু নিতে হলে প্রথমে বাড়ি থেকে গাড়িতে করে স্টেশনে নিতে হয়। এরপর আবার ঢাকায় স্টেশন থেকে গাড়িতে তুলে হাটে যেতে হয়। অন্যদিকে বাড়িতে ট্রাকে পশু ওঠালে সরাসরি গিয়ে নামে হাটে। এই কারণেই ট্রেনে আগ্রহ ছিল না। তাছাড়া ট্রেনে একজন খামারি চাইলেই তার একটি ও দুটি পশু নিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। খামারিকে পুরো ওয়াগনেরই ভাড়া দিতে হতো। অল্পসংখ্যক পশু হলে এতে ক্ষতি। কোন কোন ব্যবসায়ী কয়েকজন মিলে ওয়াগন ভাড়া নিয়েছেন। কিন্তু এসব ঝামেলার। তাই ওই ট্রেনে সাড়া পড়েনি।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ বলেন, বুকিং না থাকার কারণে শেষদিন ট্রেনটি চালানো যায়নি। তিনি স্বীকার করেন, একবার ট্রেনটির আপ-ডাউনে খরচ প্রায় লাখ টাকা। আয় হয়েছে তার অর্ধেক। ফলে এই ট্রেন চলাচলে সরকারের প্রায় এক লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। তবে খামারি ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এই ক্ষতি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন পশ্চিম রেলের এই প্রধান কর্তা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর