ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ‘একটি ডাকটিকিট শতাব্দীর পর শতাব্দীর ইতিহাসকে প্রতিনিধিত্ব করে।’ আজ বাংলাদেশের ডাকটিকিট প্রকাশের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি।
১৯৭১ সালের ২৯ জুলাই বাংলাদেশের প্রথম ৮টি ডাকটিকিট প্রকাশ করে মুজিবনগর সরকার। এগুলো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের গৌরবোজ্জ্বল অংশ। ডাকটিকিট প্রকাশের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট, ১০ টাকা মূল্যমানের একটি উদ্বোধনী খাম এবং ৫ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটা কার্ড ও একটি বিশেষ সিলমোহর প্রকাশ করেছে ডাক অধিদফতর।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম ডাকটিকিট প্রকাশের ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং ডাকটিকিটকে মুক্তিযুদ্ধে বাঙালিদের বিজয়ের একটি হাতিয়ার হিসেবে উল্লেখ করেন। স্বাধীনতার জন্য মুক্তিবাহিনী ও দেশের জনগণের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ডাকবিভাগের কর্মীদের লড়াইয়ের কথা স্মরণ করেন মোস্তাফা জব্বার। একইসঙ্গে দেশের সকল শহীদের পাশাপাশি ডাকবিভাগের শহীদ কর্মকর্তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি।
মুক্তিযুদ্ধসহ শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অবদান রাখা মানুষদের নিয়ে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশকে মহতী উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ডাকটিকিট একটি জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কথা বলে। যাদের নিয়ে ডাকটিকিট প্রকাশ করা হয় তারা ইতিহাসের খ্যাতিমান ব্যক্তি।’
মোস্তাফা জব্বার উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ৯ মাসের প্রতিটি দিনই জাতির ত্যাগের ইতিহাসের অংশ। তার কথায়, ‘সব ঘটনা নিয়ে ডাকটিকিট প্রকাশ করতে না পারলেও প্রতিটি ঘটনার প্রতিনিধিত্বমূলক একেকটি বিষয় নিয়ে আমরা ডাকটিকিট প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করছি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুবিজবর্ষে আমরা একই প্রয়াস নিয়েছি।’
মন্ত্রীর মতে, নতুন প্রজন্মের কাছে এক একটি ডাকটিকিট একেকটি মহাকাব্য হতে পারে। নতুন প্রজন্মকে স্মারক ডাক সংগ্রাহক হিসেবে উদ্বুদ্ধ করতে ফিলাটেলিক সংগঠনসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। দেশের সকল পোস্ট অফিসে যাতে স্মারক ডাকটিকিট সংগ্রহ করা যায় সেই ব্যবস্থা রাখতে ডাক অধিদফতরকে নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান শ্যামসুন্দর সিকদার দেশের প্রথম ডাকটিকিট প্রকাশের ইতিহাসসহ উপমহাদেশে ডাকটিকিট প্রকাশের ইতিহাস তুলে ধরেন। এছাড়া বক্তৃতা দেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন।