ঢাকা: এই মুহুর্তে ঢাকার বাইরে থেকে নয় ঢাকার আশেপাশের কর্মীরা বিশেষ করে যারা শিল্প-কারখানার আশপাশে থাকেন বা যারা ঈদে যাননি অথবা গিয়ে যারা ঈদের পর দিন ঢাকায় ফিরছেন শুধু তাদের নিয়ে পোশাক শিল্প কারখানা বা রফতানিমুখী শিল্প-কারখানা খোলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
তিনি বলেছেন, কারও চাকরি যাবে না সুতরাং আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। আমরা ৫ তারিখ পর্যন্ত শুধু ঢাকা এবং কারখানার আশেপাশের কর্মীদের নিয়েই রফতানিমুখী শিল্প-কারখানা খোলার নির্দেশনা দিয়েছি।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের হার কমাতে গত ২৩ জুলাই থেকে চলছে ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। যা চলবে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত।
এবারের বিধিনিষেধে গার্মেন্টসসহ সকল রফতানিমুখী শিল্প-কারখানা বন্ধ রয়েছে। এছাড়া বন্ধ রয়েছে সরকারি-বেসরকারি সকল অফিস। এরমধ্যে গত ২৯ জুলাই রফতানিমুখী শিল্প-কারখানার মালিকরা সকল শিল্প-কারখানা খুলে দেওয়ার আবেদন করে সরকারের কাছে। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ৩০ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে বলা হয়, “১ আগস্ট সকাল ৬টা থেকে রফতানিমুখী সকল শিল্প ও কল-কারখানা বিধিনিষেধের আওতা বহির্ভুত রাখা হলো।” তবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে কোথাও লেখা নাই শুধুমাত্র ঢাকার আশেপাশের কর্মীদের নিয়ে খুলতে হবে।
শনিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী শিল্প-কল-কারখানা খোলার বিষয়টি পরিষ্কার করে বলেন, “রফতানিমুখী শিল্প-কল-কারখানাগুলো ১ আগস্ট থেকে খুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যারা শুধু ঢাকাতে বা তার আশেপাশে আছে বা ঈদের পর দিন যারা ঢাকায় ফিরে এসেছে বা যারা যায়নি তাদের নিয়ে শিল্প-কারখানাগুলো তাদের নিয়ে কাজগুলো করবে ৫ তারিখ পর্যন্ত। এরপর ৫ আগস্ট বিধিনিষেধ শেষ হওয়ার আগে এরমধ্যে আমরা পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেব পরিবর্তীতে কিভাবে খোলা হবে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত ৩ বা ৪ আগস্ট জানিয়ে দেবো।
প্রজ্ঞাপনে তো লেখা ছিলো না শুধু ঢাকার আশেপাশের লোক নিয়েই খুলতে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি কিন্তু কালকে বিষয়টা ক্লিয়ার করেছি, টিভিতেও বলেছি যারা শুধু ঢাকা আছে তাদের নিয়েই কাজ করবে। ৫ তারিখের পর পর্যায়ক্রমে তারা অন্য কর্মীদের নিয়ে আসবে।
কিভাবে আনবে গণপরিবহন খোলা থাকবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, সে বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবেন সেভাবেই হবে।
শিল্প-কল-কারখানার কর্মীদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কেউ চাকরি হারাবে না। সুতরাং কাউকে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নাই। কারো ছাঁটাই হবার আশঙ্কা নাই। সেটা বিজিএমইএ সভাপতি বা শিল্প-কল-কারখানার নেতারা আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আগামী ৫ আগস্টের পর সরকারি-বেসরকারি অফিস খোলা হবে কি না জানতে চাইলে বলেন, কোন কিছুই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। খোলা হলে কি পরিসরে থাকবে? কঠোর বিধিনিষেধ থাকবে নাকি স্বল্প পরিসরে খোলা হচ্ছে সেটা ৩-৪ আগস্টের মধ্যে জানা যাবে। ঢাকার বাইরের কর্মীরা ধাপে ধাপে আসবে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলাপ করে কিভাবে করলে সংক্রমণ যাতে কমাতে পারি বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি সেটি আমাদের মূল লক্ষ্য। কি করলে ভালো হবে সেটিই নেওয়া হবে।
শিল্প-কল-কারখানা খোলার নির্দেশনা পেয়ে ফেরিঘাটে বা অন্যান্য প্রবেশ পথে মানুষের ভিড় এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এরা নিজেরা সবসময় এভাবে করে। শিল্প-কল-কারখানার প্রতিনিধিরা কিন্তু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ছোট পরিসরে শুরু করতে চাই। ৫ আগস্টের পর অফিস খোলা থাকবে না কিনা? অফিস খোলা রাখলে লোকবল শতাংশ নিয়ে চলবে এরকম যতগুলো বিকল্প চিন্তা-ভাবনা আছে সেগুলো আমরা ভাবছি। স্বাস্থ্য অধিদফতর বিধিনিষেধ বাড়াতে বলছে সেটিও বিবেচনায় নিয়েই ভাবা হচ্ছে।