তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের কঠোর প্রয়োগ করোনা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখবে

, জাতীয়

নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-22 10:53:58

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে তা চলমান করোনা মহামারী প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এক্ষেত্রে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লংঘন করে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জনগনকে তামাকজাত পণ্য সেবনে উদ্বুদ্ধকারী কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি জেলা, উপজেলা তামাক নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্স কমিটি সক্রিয়করণ, কমিনিউটি এবং তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যরত সংস্থাগুলোকে সম্পৃক্ত করে উদ্যোগ গ্রহণও জরুরী। এ ক্ষেত্রে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে পারে।

মঙ্গলবার (৪ আগস্ট ২০২১) বিকেল ৪.০০ টায় ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র আয়োজনে “তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘণের বর্তমান অবস্থা: উত্তোরণে করণীয়” শীর্ষক লাইভ টকশো-তে বক্তারা উক্ত মন্তব্য করেন।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ‘প্রত্যাশা’ মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার সাদিয়া মনোয়ারা উষা, ইয়ং পাওয়ার ইন সোস্যাল এ্যাকশন-ইপসা’র উপ-পরিচালক (সামাজিক উন্নয়ন বিভাগ) নাসিম বানু এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র প্রকল্প কর্মকর্তা মো. আবু রায়হান।

হেলাল আহমেদ বলেন, তামাক কোম্পানীর আইন লংঘনের বিরুদ্ধে এবং এর ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে এটিকে একটি সামাজিক আন্দোলনে পরিনত করতে হবে। এলাকাগুলোতে তরুণদের সংঘটিত করে এন্টি স্মোকিং ক্লাব গড়ে তুলতে হবে। স্থানীয় কমিউনিটি, থানা, সংসদ সদস্য সকলকে একাজের সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে। জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের এক্ষেত্রে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। এনটিসিসির কাজগুলিকে সমন্বয় এবং মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য লোকবল বৃদ্ধি এবং অন্তত বিভাগীয় পর্যায়ে হলেও একটি করে কার্যালয় গড়ে তোলা জরুরী।

barta24.com

সাদিয়া মনোয়ারা উষা বলেন, তরুণরা নতুন জিনিস অনুকরন করতে চায়। তামাক কোম্পানীগুলো নতুন নতুন কৌশলে এগুলো তাদের কাছে নিয়ে যাচ্ছে। খুলনায় জেলা প্রশাসক কার্যালয় এবং সিভিল সার্জন কার্যালয় সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থার সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে আইন বাস্তবায়নের অবস্থা মনিটরিং করাসহ তামাক নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। করোনা ভাইরাসের প্রভাব থেকে নিজেকে এবং পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষিত রাখতে তামাক নিয়ন্ত্রণ খুবই জরুরী। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিকভাবে প্রতিটি নাগরিকের এখানে এগিয়ে আসা জরুরী।

নাসিম বানু বলেন, বেসরকারি সংস্থাগুলো দেশে আইন প্রণয়ের বহু আগে থেকেই তামাক নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচী পরিচালনা করে আসছে। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট নামে তাদের একটি শক্তিশালী জোটও রয়েছে। তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের পরিকল্পনায় স্থানীয় সংগঠনগুলোকে রেখে বাস্তবমুখী পরিকল্পনা প্রণয়ণ করতে হবে। বিভিন্ন বিষয়ে গবেষনা থেকে প্রাপ্ত তথ্য নীতি নির্ধারকদের সাথে এডভোকেসীর ক্ষেত্রে সহায়ক। জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচীতে গবেষনা, টাস্কফোর্স কমিটি সক্রিয়করণ, আইন বাস্তবায়ন, মনিটরিং এ সকল কার্যক্রমের সাথে বেসরকারী সংস্থাগুলোকে কারিগরী ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে যুক্ত করতে হবে।

মো. আবু রায়হান বলেন, তামাক সেবনকারীদের করোনা আক্রান্তের হার ও মৃত্যু ঝুঁকি বেশি। তা স্বত্ত্বেও তামাক কোম্পানিগুলো আইন লঙ্ঘণ করে বিক্রয় কেন্দ্রে স্টিকার, ডামি প্যাকেট, ফ্লাইয়ার, ব্রান্ডের রং-লোগো সম্বলিত সোকেস/ক্যাশ বক্স এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপন, প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। বিক্রেতা ও ভোক্তাদের আকৃষ্ট করতে ফ্রি উপহার সামগ্রীও প্রদান করছে। সোস্যাল মিডিয়া, ওয়েবপেজে তামাক বিক্রয় ও প্রচারণা অব্যহত রয়েছে। নাটক/সিনেমাতেও অকারণে মাত্রাতিরিক্ত ধূমপানের দৃশ্য ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে করে শিশু-কিশোর ও তরুণরা ধূমপানে আগ্রহী হয়ে উঠছে যা আগামী প্রজন্মের জন্য এক প্রকার অশনিসংকেত। আইন ও নীতিতে দূর্বলতা ও সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন না থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে তামাক কোম্পানিগুলো এসব অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তামাক কোম্পানিগুলোকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে এফসিসিটিসি অনুসারে গাইডলাইন প্রণয়ন অত্যন্ত জরুরী।

এ সম্পর্কিত আরও খবর