করোনায় বিপাকে মুচিরা

, জাতীয়

হাবিবা বিনতে আবদুল্লাহ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ | 2023-08-27 09:47:18

‘সরকার তো ভালোর ল্যাগাই লকডাউন দিয়্যাছে। হারঘে তো খাওয়ার নাই। কাম-কাজ কম। ছ্যালাপিলা লিয়্যা কিভাবে চলবো। কেহু তো হাঁরাকে একটু সাহায্যও করে না। করোনার আগে তো দিনে ৪০০-৫০০ টাকা কামাই করতুন। এখন তো ৫০ ট্যাকাও কামাই করতে পারি না। পুলিশ আসলে দোরিয়্যা পালাইতে হয়।

শনিবার (০৭ আগস্ট) বিকেলে আক্ষেপের সুরে নিজের অসহায়ত্বের কথাগুলো বলছিলেন মদন রবীদাস। চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাতেন খাঁ মোড়ে ৫০ বছর ধরে জুতা সেলাই এর কাজ করেন তিনি। শিবতলা ইউনিয়নের ডাক্তারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মদন রবীদাস স্কুলে পড়াশোনা করেননি। বাপ-দাদার পেশা বেছে নিয়ে জুতা সেলাই করে জীবনযাপন করেন। এক সময় কোনো রকমে জীবনযাপন করলেও করোনাকালে আর আগের মতো নেই রোজগার। এতে বিপাকে পড়েছেন তিনি। তার মতো অনেকেই এখন দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। আয় রোজগার কমে যাওয়ায় দুর্দিনে থাকলেও নেই তেমন কোনো সরকারি-বেসরকারি সহায়তা।

কঠোর লকডাউনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নিম্ন আয়ের মানুষরা খুবই বিপাকে আছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাদের। নিম্ন আয়ের মানুষের আয় কমে গেছে। অনেকেই এখন ঘরে বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন। কঠোর লকডাউন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মুচি সম্প্রদায়ের জন্য।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শান্তি মোড়ে জুতা সেলাই এর কাজ করেন শ্রী মিলন। তিনি বলেন, বাপ-দাদার পেশা হিসেবে নিজেও জুতা সেলাইয়ের কাজ করেন ২৮ বছর ধরে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে দোকান বন্ধ রয়েছে। তিনি জানান, কয়েকদিন ধরে দোকান খুলছি। তবে পুলিশের টহল দেওয়ার কারণে দুপুরেই দোকান বন্ধ করে দিতে হয়। পরিবারের সদস্য সংখ্যা চারজন। অভাব-অনটনে এখন দিন কাটছে জানান তিনি। তার দাবি-এক সময় দিনে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় করতাম এই কাজ করে। লকডাউনের কারণে এখন দিনে ৫০/৭০ টাকা আয় করাও সম্ভব হয় না।

কথা হয় শিবগঞ্জ বাজারে দুলাল রবীদাস নামে এক মুচির সাথে। তিনি শিবগঞ্জ বাজারের বাগানটুলি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি প্রায় ৪০ বছর ধরে জুতা সেলাই করে সংসার চালান। করোনার কারণে কঠোর লকডাউনে মানবেতর জীবনযাপন করছেন পরিবার নিয়ে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর