তালেবানের আহ্বানে যুদ্ধে যোগ দিতে যারা দেশ ছেড়েছেন তাদের বিষয়ে সতর্ক রয়েছে গোয়েন্দারা। বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করলেই তাদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
সোমবার (১৬ আগস্ট) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে কতজন আফগানিস্তানে গেছে কিংবা সেখানে কতজন অবস্থান করছে এসব তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে আছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে আফগানিস্তান থেকে আমাদের বলা হয়নি এতজন বাংলাদেশি তাদের দেশ থেকে পালিয়ে গেছে কিংবা আটক হয়ে কারাগারে। এসব নিয়ে দেশে যারা কাজ করে তারা সতর্ক রয়েছে। আফগানিস্তান ফেরতরা যদি বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি আরও বলেন, যদি কারও সন্তান কিংবা ছাত্র হঠাৎ করে কাউকে কোনো কিছু না বলে বাড়ি থেকে চলে যায়, তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই; এসব তথ্য দ্রুত পুলিশকে জানানো উচিত।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, তালেবানরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নেওয়ার পরই ঘোষণা করবে তারা পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র। তালেবানরা আরও বলবে, আমেরিকাকে যুদ্ধে পরাজিত করে আফগানিস্তানকে স্বাধীন করেছি। এর প্রেক্ষাপটে যুবকদের ভেতর (যারা জিহাদ করতে চায়) উৎসাহ তৈরি হবে। এর ঢেউ আমাদের উপমহাদেশসহ সব দেশেই লাগবে। যে ঢেউটা শুরু হবে তা মোকাবিলার জন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। শুধু পুলিশের একার পক্ষে নয়, প্রত্যেক অভিভাবক ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রত্যেকের সহযোগিতা করা উচিত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের বিষয়টি পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, যখন আফগানিস্তানে রাশিয়ান হস্তক্ষেপ হলো ঠিক সেই সময় বিধর্মীদের পবিত্র ভূমি থেকে বিতাড়িত করার জন্য জিহাদের ডাক দেওয়া হলো। আশির দশকে বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমান এটাকে ইমানি দায়িত্ব মনে করে আফগানিস্তানে যুদ্ধ করতে যায়। সেই যুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার পর বাংলাদেশে ফিরে এসে অনেকেই প্রকাশ্যে মিছিল করার সাহসও দেখিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আফগানিস্তান ফেরত বাংলাদেশিরাই পরে হরকাতুল জিহাদ (হুজি) ও জেএমবিসহ একাধিক জঙ্গিগোষ্ঠী তৈরি করেছিল। এসব জঙ্গিগোষ্ঠী তৈরির প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল তারা কাশ্মীরে গিয়ে যুদ্ধ করবে। তারা আফগানিস্তানে যুদ্ধ করে জয় লাভ করেছে তারা কাশ্মীরে গিয়ে যুদ্ধ করেও জয়লাভ করবে বলে এমন ধারণা ছিল। এরপর নানাবিধ কারণে তারা কাশ্মীরে সফল হতে পারেনি।