করোনা মহামারির মধ্যে নতুন দুশ্চিন্তা হয়ে উঠছে ডেঙ্গু। দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত দুই মাসে মোট মৃত্যু ৪০ জনে উঠেছে। এর মধ্যে ২৮ জনই মারা গেছেন চলতি মাসের ২৬ দিনে। বাকি ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে গত মাসে। ঊর্ধ্বমুখী এই মৃত্যু হার বাড়াচ্ছে উৎকণ্ঠা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের জন্য করোনাভাইরাসের চেয়ে ডেঙ্গু বেশি বিপজ্জনক। করোনায় শিশুদের মাইল্ড সিম্পটম হয় এবং তাদের ঝুঁকিটা কম থাকে। কিন্তু ডেঙ্গুতে শিশুরা অনেক ঝুঁকিতে থাকে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৬৭ জন। এর মধ্যে রাজধানীর হাসপাতালে ভর্তি ২১৭ জন, বাকি ৫০ জন রাজধানীর বাইরে সারা দেশের বিভিন্ন বিভাগের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে সারা দেশের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ১ হাজার ৯০ জন, এর মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৯৬৫ জন।
এ বছর জানুয়ারিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে নয়জন, মার্চে ১৩ জন, এপ্রিলে তিনজন, মে মাসে ৪৩ জন, জুনে ২৭২ জন, জুলাইতে ২ হাজার ২৮৬ জন, চলতি মাসের ২৬ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৪৬২ জন। এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৪০ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে জুলাইতে ১২ জন, আগস্টে ২৮ জন মারা গেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ও সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেছেন, গত আট মাসের মধ্যে আগস্ট মাসে ডেঙ্গু রোগী সবচেয়ে বেশি। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের যেসব জায়গায় ডেঙ্গু আক্রান্ত বেশি সেসব এলাকায় মশা নিধনে ব্যবস্থা নিতে সিটি করপোরেশনকে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, শিশুদের শরীরে কামড়াতে মশার সুবিধা হয়। প্রায় বিনা বাধায় শিশুর পাতলা চামড়া ভেদ করে ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী মশা কামড়ায়। মশার কামড় থেকে বাঁচাতে মশারির পাশাপাশি ক্রিম ও রিপেলেন্ট মাখানো যেতে পারে। তাই জ্বর এলে করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু টেস্টও করাতে হবে।
ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় সরকারি কয়েকটি হাসপাতাল নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল, রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতাল, আমিনবাজার ২০ শয্যা হাসপাতাল, লালকুঠি হাসপাতাল, কামরাঙ্গীরচর ৩১ শয্যা হাসপাতালসহ ঢাকার বাইরে গাজীপুরের শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালকেও ডেঙ্গু রোগী ভর্তির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর চাপ।