করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে কর্তৃপক্ষ নানা পদক্ষেপ নিলেও চিড়িয়াখানার দর্শনার্থীদের মধ্যে সেসব মানার প্রবণতা দেখা যায়নি। মাস্ক পরে ভেতরে ঢুকলেও কিছুক্ষণ পর অনেকের মুখে আর মাস্ক থাকেনি। পশু-পাখির খাঁচার সামনে জটলাও দেখা গেছে বেশ। প্রবেশ ফটকেও দেখা গেছে ভিড়।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ তাপমাত্রা মেপে, হাত স্যানিটাইজ করে দর্শনার্থীদের প্রবেশের ব্যবস্থা করেছে। মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেয়নি। চিড়িয়াখানার ভেতরে ১২টি জায়গায় দর্শনার্থীদের জন্য হাত ধোয়ার ব্যবস্থা ছিল। মাইকিং করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধও জানানো হয়েছে বার বার।
দীর্ঘদিন পর চিড়িয়াখানা খুলে দেওয়ায় মানুষের ঢল নামে। সারা দিনই রাজধানীর আকাশ মেঘে ঢাকা ছিল। মাঝেমধ্যে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও নেমেছে। সাপ্তাহিক ছুটির এই দিনে মেঘ-বৃষ্টি উপেক্ষা করেই দর্শনার্থীরা চিড়িয়াখানায় যান। দীর্ঘদিন পর চিড়িয়াখানা খোলায় দর্শনার্থীরা ছিলেন উচ্ছ্বসিত। অনেকের মুখে মাস্ক ছিল না।
রাজধানীর উত্তর ভাষাণটেক এলাকা থেকে জাতীয় চিড়িয়াখানায় এসেছেন শোয়েব। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ খুবই সন্তোষজনক উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু সামাজিক দূরত্ববিধি মানাটা হচ্ছে না। মানুষজন যে যার মতো করে হাটছে; গায়ে গা লেগে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে নজরদারি করলে আরো ভালো হয়।
মাটিকাটা এলাকার মামুন বলেন, করোনায় অনেক দিন বাসাবন্দি ছিলাম। স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে আজই বাসা থেকে বের হলাম। ভালোই লাগছে।
জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক আব্দুল লতিফ জানান, শুক্রবার ১৪ হাজারের মত টিকেট বিক্রি হয়েছে। মানুষ অনেক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে চিড়িয়াখানায় এসেছে। তারা সবকিছু দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। দীর্ঘদিন পর মানুষ দেখে পশুপাখিরাও আনন্দ পেয়েছে।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়ায় গত ২ এপ্রিল বন্ধ করে দেওয়া হয় মিরপুরের এই চিড়িয়াখানা। লকডাউন তুলে নেওয়ার এক সপ্তাহ পর ১৯ আগস্ট থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে পর্যটন কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র খুলে দেওয়ার অনুমতি দেয় সরকার।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসের প্রথম রোববার চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীরা বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবে বলে জানান পরিচালক আব্দুল লতিফ।