মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বাড়ছেই। জেলার সব পয়েন্টেই যমুনার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে জেলার চার হাজার ৩৬২ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। নদী ভাঙন ও পানি বৃদ্ধির ফলে অবনতি হচ্ছে জেলার বন্যা পরিস্থিতি।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) সকাল ১১টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর ও কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যমুনা নদীর পানি।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সিরাজগঞ্জের সব পয়েন্টেই যমুনার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। পানি বাড়া এখনও অব্যাহত রয়েছে। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পানি বাড়বে বলে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে।
এদিকে, যমুনাসহ অভ্যন্তরীণ, করতোয়া, ইছামতি, ফুলজোড়, হুড়াসাগর ও বড়াল নদীর পানিও বাড়ছে। সব নদ-নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের ফসলের মাঠগুলো তলিয়ে গেছে। এ সকল এলাকার বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানি উঠে পড়ায় বিপাকে রয়েছেন দুর্গতরা। বন্যা কবলিত এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ায় নষ্ট হচ্ছে রোপা আমন ক্ষেত ও বীজতলা, আখ, পাট, তিল ও সবজি বাগানসহ বিভিন্ন ফসল।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো: আবু হানিফ জানান, গত কয়েকদিনে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার ফলে নিম্নাঞ্চলের ৪ হাজার ৩৬২ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এসব ফসলের মধ্যে রোপা আমন, বোনা আমন, আগাম সবজি, আখ, বীজতলা ও বাদাম রয়েছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, এখনও ঘর-বাড়িতে পানি ওঠার খবর পাওয়া যায়নি। বন্যাকালীন দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য সাড়ে ৫শ টন চাল ও নগদ আড়াই লাখ টাকা মজুদ রয়েছে। এছাড়াও উপজেলাগুলোতে মোট ১২৫ টন চাল মজুদ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ১ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।