‘দুনিয়াতে এখনো ভালো মানুষ আছে’

রাজশাহী, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 20:22:40

রিপন চন্দ্র রায়। একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। তিনি ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জ উপজেলার থুমনিয়া কামারপাড়া গ্রামের দরিদ্র পরিবারের সন্তান। বাবা মায়ের ৩ সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে রিপন। তার বাবা ভবেশ চন্দ্র রায় একজন মুদি দোকানদার। অর্থের অভাবে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি।

কিন্তু দরিদ্র হলেও থেমে ছিল না রিপনের পড়াশোনা ও মেডিকেল কলেজে পড়ার স্বপ্ন। অনেক কষ্টের মধ্যেও নিজের পড়াশোনাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন । রিপনের স্বপ্ন, তিনি ভালো একটি মেডিকেল কলেজে পড়বেন এবং বড় একজন ডাক্তার হবেন।

২০১৫ সালে জননন্দা এস.সি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন রিপন। এরপরে পীরগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় ৪.৯০ জিপিএ পেয়ে আবারো বাবা মায়ের মন জয় করেন তিনি। এরপর থেকে তার ভাগ্য পরিবর্তন হতে শুরু করে।

চলতি বছরের ৫ অক্টোবর যশোর মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন রিপন। এর দুইদিন পর ওই পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পান। তবে মেডিকেলে ভর্তিসহ পড়াশোনার খরচ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে শঙ্কা দেখা দেয়।

কিন্তু বুধবার (২৪ অক্টোবর) ‘রুরাল ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস (আরডিএস) নামে ঠাকুরগাঁওয়ের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। সকালে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে রিপনের পড়াশোনার খরচ বহনের ঘোষণা দেয় সংস্থাটি।

এ সময় প্রধান অতিথি হিসিবে উপস্থিত ছিলেন- ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. একেএম কামরুজ্জামান সেলিম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নূর কুতুবুল আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিনুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি মনসুর আলীসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।

এ সময় আরডিএসের নির্বাহী পরিচালক আলমগীর হোসেন ১০ হাজার টাকা তুলে দেন রিপন চন্দ্র রায়কে। আলমগীর হোসেন জানান, রিপনের মেডিকেলে পড়ার সম্পূর্ণ খরচ বহন করবেন তারা।

রিপন চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমি একজন বড় চিকিৎসক হতে চাই। আমাকে সাহায্য করার জন্য আরডিএসকে ধন্যবাদ জানাই। তারা আমাকে সাহায্য করে বুঝিয়ে দিল যে দুনিয়াতে এখনো অনেক ভালো মানুষ আছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর