বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৩ হাজারের বেশি নারী নতুন করে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন। ৫০ বছরের ওপরে যাদের বয়স, তাদের এই রোগের ঝুঁকি বেশি। তবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রোগীদের এক জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে ৩৫ থেকে ৪০ বছরের নারীদের মধ্যেও এই স্তন ক্যানসার হচ্ছে। শতকরা ৮২ ভাগ স্তন ক্যানসার রোগী আসেন শেষ পর্যায়ে। প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যানসার শনাক্ত হলে শতকরা ৯৫ ভাগ ক্ষেত্রে তা নিরাময় করা সম্ভব বলে জানান সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
রাজধানীর পান্থপথ বিআরবি হাসপাতাল মিলনায়তনে ‘স্তন ক্যানসার সচেতনতা সেবা সপ্তাহ-২০২১’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান। বিআরবি হাসপাতাল লিমিটেড এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশে নারীদের অসচেতনতাই এই ক্যানসার হওয়ার জন্য দায়ী বলে জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনকোলজি ক্লাব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. এম এ হাই বলেন, শরীর ও মনের পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করতে পারলে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা সম্ভব। স্বাস্থ্যকর খাবার, শরীরচর্চা ও ধ্যান বা মেডিটেশনের মাধ্যমে সুস্থ থাকা সম্ভব।
সভাপতির বক্তব্যে বিআরবি হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী ডা. মো. মনসুর আলী বলেন, স্তন ক্যানসার জিনগত কারণেও হয়ে থাকে। সেটাও এখন পরীক্ষা করা সম্ভব। আমাদের দেশে প্রতি বছর বিভিন্ন ক্যানসারে ২ লাখ মানুষ আক্রান্ত হন এবং এর মধ্যে ১ লাখ মৃত্যুবরণ করেন।
বিআরবি মেডিক্যাল অনকোলজি বিভাগের প্রধান ডা. মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ক্যানসার চিকিৎসা ব্যয়বহুল। কীভাবে একজন ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা ব্যয় কমিয়ে আনা যায়, সেদিকে জোর দিতে হবে।
ব্রিটিশ অনকোপ্লাস্টিক ব্রেস্ট সার্জন ডা. এস কে ফরিদ বলেন, আধুনিক চিকিত্সায় স্তন রেখেই সার্জারি করা সম্ভব। যা আমাদের দেশেই এখন হচ্ছে। বিদেশে স্তন ক্যানসারের যে চিকিত্সা পদ্ধতি, তা এখন বাংলাদেশের বেশকিছু হাসপাতালে করা হচ্ছে।
বিআরবি হাসপাতালের ব্রেস্ট ইউনিটের কনসালটেন্ট ডা. আলী নাফিসা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে শতকরা ৩০ ভাগ স্তন ক্যানসারে মৃত্যু প্রতিরোধ করেছে। আমাদের দেশে ৩৫ বছরের পর থেকে নিয়মিত স্তন পরীক্ষার এবং ম্যামোগ্রাফির মাধ্যমে স্তন ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাাড়তে কাজ করতে হবে। কারণ প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে শতকরা ৯৫ ভাগ স্তন ক্যানসার নিরাময় সম্ভব।