চন্দ্রিমায় জিয়ার লাশ নেই, লুই কানের নকশা বাস্তবায়নের দাবি

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 09:41:58

চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের লাশ নেই বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, ওখানে জিয়াউর রহমানের লাশ নেই। একটা বাক্স রেখে বলতেছে এটা জিয়াউর রহমানের লাশ। এই বিভ্রান্ত দূর হয়ে গেছে। ওখানে যে বাক্সটা আছে, ওই বাক্সটা সরিয়ে লুই আই কানের ডিজাইন যেটা আছে সেইটাকে বাস্তবায়ন করেন মাননীয় স্পিকার।

তিনি বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, লাশ থাকলে প্রমাণ করেন? এক মাস সময় দিলাম। আপনার তখন ক্ষমতায় ছিলেন। তখন সেনাপ্রধান ছিলেন এরশাদ সাহেব সেও দেখে নাই। আপনারা তাহলে কিভাবে প্রমাণ করবেন ওখানে জিয়াউর রহমানের লাশ আছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্থদশ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে কথাগুলো বলেন সাবেক এই মন্ত্রী। এসময় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী সংসদে উপস্থিত ছিলেন।

শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, বিএনপির সংসদ সদস্যরা এই সংসদ ভবনে জিয়াউর রহমানের কবর আছে এটা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। কিন্তু ওখানে যে জিয়াউর রহমানের কবর নাই। এটা ৪০ বছর আগেই সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ২০ জুন ১৯৮১। আমি তখন নতুন পার্লামেন্ট মেম্বার। জিয়াউর রহমান মারা গেছে। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তার পরিবারের কেউ দেখে নাই। তার লাশ খালেদা জিয়া দেখে নাই, তারেক জিয়া দেখা নাই ইত্তেফাকে বের হয়েছে। সেখানে গিয়ে সে কান্নাকাটি করেছে আমার বাপের লাশ দেখাও। শাহ আজিজ একটা চালাকি করেছে, সে বলছে যে লাশ পাওয়া যাক আর না যাক একটা বাক্স পাঠিয়ে দাও। সেই বাক্স ওখানে পাঠায়।

সেদিন জনমনে সন্দেহ ছিল যে কিসের জানাজা করছি? এটা কি বাক্স? না জিয়াউর রহমান আছে। কারণ কোনো মন্ত্রীও দেখে নাই। তখন সরকারে বিএনপি ক্ষমতা সব তাদের। আমি ২০ জুন ১৯৮১ পার্লামেন্টে সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিলাম।

এসময় বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য কিছু বলায় তাদের জবাবে শেখ সেলিশ বলেন, ৪০ বছর পর আবারও লাশ নিয়ে কেন লাফালাফি করছেন? ওটা প্রমাণই করতে পারেন নাই। আমি বলেছিলাম ওটা আপনারা প্রমাণ করেন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তার লাশ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ও বিভিন্ন জনমনে বিভিন্ন সন্দেহ দেখা দিয়েছিল। এটা আমার সেই সময়কার বক্তব্য।

শেখ সেলিম বলেন, সেদিন রাষ্ট্রপতিকে দেখার জন্য বহুলোক সমাগত হয়েছিল কিন্তু কাউকে লাশ দেখানো হয়নি। তাই জনমনে সন্দেহ এই লাশ কার লাশ? জনগণের সন্দেহ ওই বাক্সের ভেতরে কোনো লাশ আছে কি না? তাই সরকারকে অনুরোধ করব যদি ওটা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের লাশ হয়ে থাকে তাহলে নিশ্চয় আপনাদের কাছে সেই লাশের ছবি আছে। আগামী ২ দিনের ভেতর পত্রপত্রিকায় সেই ছবি ছাপিয়ে জনগণের সন্দেহ দূর করার চেষ্টা করবেন। আর যদি তা করতে না পারেন জনগণের সন্দেহ যেটা হয়েছে সেটাই পরিণত হবে।

তিনি বলেন, আজ ৪০ বছর পর্যন্ত একটা ছবি দেখাতে পারেন নাই। একটা বাক্স কবর দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। রাষ্ট্রপতি, সেনাপ্রধান সব কিছু হয়েও একটা ছবি নাই। যে কোনো একটা মন্ত্রী মারা গেলেও তো তার ছবি ছাপা হয়। ৪০ বছরেও একটা ছবি ছাপাতে পারেনি। একটা বাক্স এনে বলে এটা জিয়াউর রহমানের লাশ। এই বিভ্রান্ত দূর হয়ে গেছে।

স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ওখানে যে বাক্সটা আছে, ওই বাক্সটা সরিয়ে লুই আই কানের ডিজাইন যেটা আছে সেইটাকে বাস্তবায়ন করেন। লুই কান বলছে ওখানে কোনো স্থাপনা হবে না। ওই কবরে যদি বাক্সটা থাকে ওখান থেকে সরিয়ে দেন। সংসদের সৌন্দর্য্য বিনষ্ট করা যাবে না।

এসময় তিনি আরও বলেন, এটাই শুধু করে নাই। ওটাকে জায়েজ করার জন তিন বড় রাজাকার শাহ আজিজ, সবুর খান আর মশিউর রহমান তাদেরও পাশে কবর দিছে। এদের কবরও এখান থেকে সরিয়ে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। মানুষ এই সকল বিভ্রান্ত আর সহ্য করবে না।

বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে শেখ সেলিম বলেন, আজকেও সংসদে সংশোধনী জনমত যাচাই যে কোনো বক্তৃতায় জিয়াউর রহমানের লাশ জিয়াউর রহমানের লাশ বলে চিল্লা চিল্লি করছেন। আরে কিসের জিয়াউর রহমানের লাশ? লাশ প্রমাণ করেন। এক মাস সময় দিলাম। আপনার তো তখন ক্ষমতায় ছিলেন। তখন সেনাপ্রধান ছিলেন এরশাদ সাহেব, সেও দেখে নাই আপনারা তাহলে কিভাবে প্রমাণ করবেন? জনমনে যে সন্দেহ ছিল সেটা বাস্তবায়িত হয়েছে। এটা প্রমাণ করতে পারে নাই। এই লাশ নিয়ে আর রাজনীতি কইরেন না। ওখানে কোনো লাশও নাই কিছু নাই একটা বাক্সের মাটি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, লাশ যদি থাকত প্রমাণ করতে পারতেন, সুতরাং জনগণকে বলব এটা ৪০ বছর আগে সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে এখানে একটা বাক্স এনে কবর দিছে। তখন ক্ষমতায় বিএনপি, তাদের ক্ষমতায় ছিল তারা প্রমাণ করতে পারে নাই ৪০ বছর আগে। সুতরাং ওখানে কোনো লাশ নাই। জানাজা করছে একটা বাক্সের। তার ছেলে কে দেখায় নাই কেন? স্ত্রীকে দেখান নাই কেন? স্পিকারকে দেখান নাই কেন। আবার বলে আর্মি ড্রেস পরা ছিল। জিয়াউর রহমান কি আর্মি ড্রেস পরে মরছে? সেখানে কোনো ড্রেস ছিল না। একটা বানাইয়া বলে যে এইটা জিয়াউর রহমানের লাশ। এই দুই নম্বর রাজনীতি বহু করছেন। বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের চিনছে। আর দুই নম্বর রাজনীতি করবেন না, সত্য যেটা সত্য হয়ে থাকবে মিথ্যা যেটা মিথ্যা হয়ে থাকবে। জিয়াউর রহমান যা অপকর্ম করছে তার পরিণতি আরও দেখেন আপনাদের কি হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর