তৃণমূলের পরীক্ষিত, নিবেদিত ও দুঃসময়ে যারা পাশে ছিল- সেসব কর্মীদেরকে দলে জায়গা দিতে হবে। অসৎ, সুযোগসন্ধানী ও সুদিনের মৌমাছির মতো যারা দলে ভিড়েছে (অনুপ্রবেশ করেছে) তাদেরকে কোনমতেই কমিটিতে স্থান দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইলের মধুধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। জেলা পরিষদের মধুপুর অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত বিশেষ বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শফিউদ্দিন মনি ।
মন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ দেড় বছরে ধরে চলা করোনার প্রকোপের কারণে আওয়ামী লীগের অনেক জেলা, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড সম্মেলন শেষ করা যায় নি। অনেক কমিটিই মেয়াদোত্তীর্ণ। এই মুহূর্তে করোনার সংক্রমণ অনেকটা কমে এসেছে, এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে নতুন করে দলের কাজ শুরু করতে হবে। কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করে দলকে গুছানো ও আরও সুসংগঠিত করতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক, বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবসময়ই অত্যন্ত শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ দল। দলটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই জাতীয় স্বার্থে যে কোন ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। আওয়ামী লীগ জাতীয় স্বার্থে কখনও কোনদিন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে না।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ড. রাজ্জাক আরও বলেন, আন্দোলন-সংগ্রামের নামে গাড়িতে, বাড়িতে, রাস্তায় নিরপরাধ মানুষকে পুড়িয়ে মারার আগুন সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যমূলক কর্মকাণ্ড থেকে আপনারা বিরত থাকুন। আগামী ২০২৩ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। দেশের জনগণ আপনাদেরকে ভোটে বিজয়ী করলে আমরা আপনাদেরকে স্বাগত জানাব। কিন্তু আন্দোলন-সংগ্রামের নামে সন্ত্রাস-নৈরাজ্যমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটান যাবে না, সে শক্তি বিএনপির নেই।
সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছরোয়ার আলম খান আবুর সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইয়াকুব আলী, আব্দুল গফুর মন্টু, মেয়র সিদ্দিক হোসেন খান প্রমুখ।
এদিকে একইদিন সন্ধ্যায় মধুপুর বেরীবাইদ ইউনিয়নের মাগন্তি নগর এলাকায় অ্যালোভেরা, কফি ও কাজু বাদাম চাষের কৃষি খামার উদ্বোধন ও পরিদর্শন করেন কৃষিমন্ত্রী। রাতে ধনবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে এক বিশেষ মতবিনিময় সভায় যোগ দেন। রাত ৯টা পর্যন্ত চলা মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী দলকে সুসংগঠিত করা ও আগামী ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করাসহ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় রেখে দেশের স্বার্থে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানান।
এদিকে, দলের বিশেষ বর্ধিত সভায় অংশ গ্রহণ নিয়ে এক পর্যায়ে দুই গ্রুপের মুখোমুখি অবস্থানে চরম হট্টগোল শুরু হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা স্থানীয় সংসদ সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এ প্রীতিকর পরিস্থিতিতে বিব্রত বোধ করেন। মাইক হাতে নিয়ে মন্ত্রী তাৎক্ষণিক বক্তৃতায় উভয় পক্ষের প্রতি রাজনৈতিক সহনশীল ভূমিকার আহবান জানান। শান্ত হলে দলের বর্ধিত সভার কাজ শুরু হয়।