'সাগর পেরিয়ে কলেজে আসলাম'!

, জাতীয়

কনক জ্যোতি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম | 2023-08-22 14:24:07

প্রতিদিন হেঁটে কিংবা যানবাহনে কলেজে যান তরুণ অধ্যাপিকা নুসরাত জাহান ডায়না। রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) বৃষ্টিস্নাত সকালে তিনি মন্তব্য করলেন, 'সাগর পেরিয়ে কলেজে আসলাম'!

চট্টগ্রামের মুরাদপুর থেকে নাসিরাবাদের কলেজ পর্যন্ত পুরো রাস্তাই জলমগ্ন। থৈথৈ পানিতে রাস্তা আর ড্রেন একাকার। তারমধ্যেই কায়ক্লেশে কাজে যাচ্ছেন লোকজন।

একপশলা বৃষ্টি হলেই চট্টগ্রামের ভূগোল বদলে যায়। পুরো শহরই রূপ নেয় সাগরে। কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, যেমন মুরাদপুর, নাসিরাবাদ, জিইসি, ওয়াশা, বহদ্দারহাট কোমর পানির নিচে তলিয়ে যায়। পাহাড়-ঘেরা শহরকে তখন মনে হয় জলবেষ্টিত দ্বীপ।

চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ, সিডিএ, হালিশহরের পরিস্থিতি আরও নাজুক আকার ধারণ করে বৃষ্টিতে। সেখানে ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে যায়। কোথাও কোথাও সাঁতার কাটার অবস্থা তৈরি হয়।

ভয়াবহ জলাবদ্ধতা চট্টগ্রামে শুধু নাগরিক বিপদই বাড়ায় না, প্রাণঘাতী পরিস্থিতি তৈরি করে। সড়ক আর পার্শ্ববর্তী ড্রেন একাকার হয়ে যাওয়ায় মানুষে চিনতে পারে না কোনটি রাস্তা আর কোনটি নালা। তখন ঘটে মারাত্মক বিপর্যয়।

সাম্প্রতিক সময়ে হাঁটতে হাঁটতে জলমগ্ন ড্রেনে চলে গিয়েছিলেন এক ব্যবসায়ী। নিমেষে তলিয়ে যান তিনি। তার লাশও পাওয়া যায় নি। কিছুদিন আগেও জলমগ্ন নাসিরাবাদ ২নং রেলগেটের পাশে অতল ড্রেনে পড়ে যায় এক চলন্ত সিএনসি আর তাতে মৃত্যু ঘটে দুজন আরোহীর। বহু রিকশার চালক রাস্তা আর ড্রেনের পার্থক্য বুঝতে পারেন না জলের কারণে। চলতে চলতে একটু অসতর্ক হলেই বৃষ্টির পানিবাহিত ড্রেনের তীব্র স্রোতে ভেসে যান অনেক মানুষ, ভেসে যায় যানবাহন। অনেকেই আহত হয়ে রক্ষা পেলেও মারা যান অনেকেই।

বৃষ্টি আর বিভীষিকা চট্টগ্রামে সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে। শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) চলমান বৃষ্টিতে চট্টগ্রামের অধিকাংশ এলাকাই চলে গেছে জলের তলায়। এক-দুই ঘণ্টার বৃষ্টিতেই ভেসে যায় নগরের প্রধান প্রধান সড়ক ও অভিজাত এলাকা। দুর্যোগের সঙ্গে এসে যুক্ত হয় প্রাণ হারানোর বিপদ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর