বিশ্ব পর্যটন দিবস আজ

, জাতীয়

নিউজ ডেস্ক, বার্তা ২৪ | 2023-09-01 19:17:56

'অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে পর্যটন' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ (২৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে উদযাপন করা হবে বিশ্ব পর্যটন দিবস। প্রতিবছরের মতো এবারও বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডসহ বিভিন্ন পর্যটন সংস্থা দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

পর্যটনের ভূমিকা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক উপযোগিতাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া এ দিবসের লক্ষ্য। জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থার (ইউএনডব্লিউটিও) উদ্যোগে ১৯৮০ সাল থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর দিবসটি পালন করা হয়।

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আজ এক বাণীতে স্থানীয় কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকে সমুন্নত রেখে পর্যটনের উন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে পর্যটন সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের বৈচিত্রময় পর্যটন আকর্ষণসমুহকে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিকট তুলে ধরার প্রয়াসে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে যেতে হবে। বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশের সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের পাশাপাশি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে। একই সাথে বিশ্ব দরবারে দেশের পর্যটন শিল্পকে কার্যকরভাবে তুলে ধরতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, পর্যটন শিল্প বর্তমান বিশ্বে শ্রমঘন এবং সর্ববৃহৎ শিল্প হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়নসহ দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য পর্যটনের গুরুত্ব অবশ্যম্ভাবী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে পর্যটনের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে এই শিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। আবহমান গ্রাম বাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রেখে যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দায়িত্বশীল পর্যটন কার্যক্রম পরিচালনা করতে এবং এর সুফল যাতে স্থানীয় জনগোষ্ঠী ভোগ করতে পারে সেলক্ষ্যে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।

পর্যটন দিবস উপলক্ষে সোমবার দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে পর্যটন করপোরেশন। সকাল ৯টায় শেরেবাংলা নগরের পর্যটন ভবনে কুকিং শো’র আয়োজন করেছে তারা। এছাড়া ভ্রমণপিপাসুদের জন্যে দেশের পর্যটন হোটেল-মোটেলগুলোতে একদিনের জন্য ৩০ শতাংশ ছাড় ঘোষণা করেছে পর্যটন করপোরেশন।

সকাল সাড়ে ৯টায় পর্যটন ভবনে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে উপস্থিত থাকবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। এছাড়াও বিশেষ এই দিনটিতে দেশের পর্যটনের বিকাশে ঘোড়ার গাড়ির র‍্যালির আয়োজন করা হয়েছে।

এছাড়া, বাদ্যযন্ত্রসহ ২০টি সুসজ্জিত রিকশার একটি র‍্যালি রাজধানীর গুলশান-বারিধারা কূটনৈতিক এলাকায় বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে প্রচারণা চালাবে। দেশের প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পর্যটন অংশীজনদের নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে এবং শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকবে।

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে আরও নানা আয়োজনের পাশাপাশি আগামী ২ অক্টোবর নড়াইল জেলায় জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের আয়োজনে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হবে।

বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থা ১৯৮০ সাল থেকে প্রতিবছর ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস পালন করছে। আমরাও দিবসটি একযোগে পালন করছি। এই দিবসের লক্ষ্য হচ্ছে, বিশ্ববাসীকে পর্যটনের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করা। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও জাতীয় অর্থনীতিতে পর্যটনের অবদান সম্পর্কে অবহিত করা।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্বের পর্যটন শিল্প কোভিড-১৯ মহামারির এই সময়ে একটি বিশেষ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ এর কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পগুলোর একটি পর্যটন শিল্প। বাংলাদেশও বৈশ্বিক এই পরিস্থিতির বাইরে নয়। এই মহামারির কারণে দীর্ঘদিন আমাদের পর্যটন স্পট ও এই শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাখতে হয়েছিল। গতবছর এই সময়ে সংক্রমণের হার বেশি থাকায় বিশ্ব পর্যটন দিবসের সব কর্মসূচি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আয়োজন করতে হয়েছিল।

এ সম্পর্কিত আরও খবর