ধর্মঘটে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি ব্যাহত

চট্টগ্রাম, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-23 08:05:22

সড়ক পরিবহণ আইনের সংশোধন চেয়ে পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকদের ডাকা দেশব্যাপী টানা ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের প্রথমদিনে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে। ধর্মঘটে পরিবহণ চলাচল বন্ধ থাকায় পণ্য উঠানামা ও পণ্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

গড়ে প্রতিদিন যেখানে তিন হাজার একক কন্টেইনার ও ১৫ হাজার টন খোলা পণ্য বন্দর থেকে বের হয়, সেখানে রোববার (২৮ অক্টোবর) সকাল আটটা থেকে কোনো আমদানি পণ্য বের হয়নি।

একই অবস্থা দেখা দিয়েছে রফতানি পণ্য জাহাজীকরণের ক্ষেত্রেও। ২০১৩ সালে বিএনপি-জামায়াতের টানা অবরোধের পর এমন অচলাবস্থা আর দেখা যায়নি দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দরে।

এদিকে অচলাবস্থার কথা স্বীকার করছেন না চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র জাফর আলম। তিনি বলেন, বন্দরের ভেতরে সীমিত পরিসরে কিছু পণ্য উঠানামার কাজ হয়েছে আর বন্দর থেকে বের হতে না পারায় বিপুলসংখ্যক কন্টেইনার বন্দরের ভেতর জমে গেছে। বন্দরের অগ্রগতির পথে এই ধর্মঘট একটি বাধা।’

‘আমরা চাই দ্রুত ধর্মঘট প্রত্যাহার করে বন্দর স্বাভাবিক হোক। ধর্মঘট শুরুর আগে যেসব গাড়ি ঢুকেছিল সেগুলো পণ্যভর্তি করে বন্দরের ভিতরই আটকা পড়েছে।’ ধর্মঘটের এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে সোমবার রফতানি পণ্য না নিয়েই বিদেশি জাহাজকে বন্দর ছাড়তে হবে বলে জানান জাফর। আর এতে বিপাকে পড়ে আর্থিক ক্ষতি গুণতে হবে দেশের রফতানিকারকদের।

কন্টেইনার ডিপো মালিকদের সংগঠন বিকডা বলছে, স্বাভাবিক দিনে এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার একক রফতানি কন্টেইনার ডিপো থেকে বন্দর নিয়ে জাহাজে বোঝাই করা হয় আর এক হাজার একক আমদানি পণ্যভর্তি কন্টেইনার ডিপো থেকে ডেলিভারি হয়। দুই হাজার একক খালি কন্টেইনার বন্দরের উদ্দেশ্যে যায়।

কিন্তু ধর্মঘটের কারণে রোববার সারাদিন কোনো কাজই হয়নি। ধর্মঘটের এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে আজ সোমবার হয়তো একাধিক জাহাজকে রফতানি জাহাজ কন্টেইনার বোঝাই না করেই চলে যেতে হবে।

বন্দর কর্মকর্তারা জানান, বন্দর থেকে পণ্যবাহী কন্টেইনার চট্টগ্রাম বন্দরের আশেপাশে গড়ে উঠা বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোতে যায়। বাকিগুলো দেশের বিভিন্ন আমদানিকারকের কাছে পৌঁছে।

বন্দরের চিটাগাং কন্টেইনার টার্মিনালের (সিসিটি) অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেকের চীফ অপারেটিং অফিসার ক্যাপ্টেন তানভীর হোসাইন বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে এনসিটি ও সিসিটিতে সকাল আটটা থেকে ১২ ঘণ্টায় দুই হাজার ৫৫০ একক কন্টেইনার জাহাজীকরণ হয়। ধর্মঘটের কারণে সেটি হয়েছে মাত্র ৫০০ একক। আর দুই হাজার একক কন্টেইনার ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত থাকলেও একটি কন্টেইনারও বন্দর থেকে বের হয়নি।’

রফতানিকারকরা বলছেন, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রফতানি কন্টেইনার বোঝাই করে জাহাজটি প্রথমে শ্রীলংকার কলম্বো, সিঙ্গাপুর কিংবা মালয়েশিয়ার পোর্ট কেলাঙ ও তানজুম পেলিপাস বন্দরে পৌঁছে। সেই বন্দর থেকে আরেকটি বড় জাহাজে বোঝাই করে ইউরোপ-আমেরিকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। একদিন আগে পরে হয়ে গেলে নির্দিষ্ট জাহাজে পণ্য তোলা যায় না।

আর নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌছানো যায় না বলে বাড়তি মাসুল গুণতে হয়। অনেক সময় বিদেশি ক্রেতা পণ্য ফেরত পাঠায় কিংবা ডিসকাউন্ট দিয়ে পণ্য গ্রহণ করে। আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন দেশীয় রপ্তানিকারকরা।।

এ সম্পর্কিত আরও খবর