যৌন নিপীড়নকারী ছাত্র হলে শ্রেণিকক্ষে আসা বিরত রাখার প্রস্তাব

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-26 22:01:49

যৌন হয়রানি বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। সেক্ষেত্রে কারো বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হলে ফৌজদারি আইনের আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযোগকারী যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে প্রমাণিত হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের জন্য সুপারিশ করেছে হাইকোর্ট।

বাল্যবিবাহ ও যৌন হয়রানি বন্ধে হাইকোর্টের নীতিমালায় ১১ ধারায় শাস্তির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে (ব্যতিরেকে) সাময়িকভাবে বরখাস্ত করতে পারেন এবং ছাত্রদের ক্ষেত্রে অভিযোগ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তাদেরকে শ্রেণি কক্ষে আশা থেকে বিরত রাখতে পারেন। আর অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করবে এবং সকল সরকারি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং কর্মক্ষেত্রের শৃঙ্খলা বিধি অনুসারে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং যদি উক্ত অভিযোগের যে কোন ধারা অনুযায়ী অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় তাহলে প্রয়োজনীয় ফৌজদারি আইনের আশ্রয় নিতে হবে যা পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট আদালতে বিচার করবে।

বিধিমালায় আরও বলা হয়েছে- সাক্ষ্য গ্রহণের সময় যথাসম্ভব গোপনীয়তা বজায় রাখতে হবে। অভিযোগকারী যদি অভিযোগ তুলে নিতে চায় বা তদন্ত বন্ধের দাবি জানায় তাহলে এর কারণ তদন্ত করে প্রতিবেদনে উল্লেখ করতে হবে। অভিযোগ কমিটি ৩০ দিনের মধ্যে তাদের সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং কর্মক্ষেত্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রদান করবে প্রয়োজনে এর সময়সীমা ৩০ কার্যদিবস থেকে ৬০ কার্যদিবসের বাড়ানো যাবে। যদি এটা প্রমাণিত হয় যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের জন্য সুপারিশ করা হবে। অভিযোগ কমিটির বেশিরভাগ সদস্য যে রায় দিবে তার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বৈঠকে উপস্থিতি কমিটি সদস্য আ স ম ফিরোজ বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধে তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে। এজন্য জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সার্ভারের তথ্যকে ব্যবহার করে বিয়ের কাজী নিজের তথ্য ও বিয়ে প্রার্থী তথ্য ইনপুট দিয়ে বিয়ের ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট গ্রহণের সিস্টেম চালু করতে হবে।

এছাড়া বাল্যবিবাহ বন্ধে গ্রামভিত্তিক সচেতনতা কার্যক্রম চালু করতে হবে। মাদক নিয়ন্ত্রণ, নারীর প্রতি সহিংসতা ও বাল্য বিবাহ নিরোধ ইভটিজিং প্রতিটি থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তত্ত্বাবধানে একজন নারী কর্মকর্তাকে দায়িত্ব প্রদান করতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সকল সরকারি সংস্থা দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্র শিক্ষক কর্মচারীদের নিয়মিত ডোপ টেস্টের আওতায় আনতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা কার্যক্রম গুলো আরো বেশি দৃশ্যমান করতে হবে। ইভটিজিং বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। স্কুল কলেজ অধ্যায়নরত এবং ছাত্র-ছাত্রীদের চলাচলের পথে বখাটে ছেলেদের ফুটপাত বন্ধে পুলিশের কঠোর নজরদারি রাখতে হবে

রোববার (০৩ অক্টোবর) সংসদ ভবনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কমিটির সভাপতি মো. শামসুল হক টুকু’র সভাপতিত্বে সদস্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, পীর ফজলুর রহমান, নূর মোহাম্মদ এবং বেগম রুমানা আলী অংশগ্রহণ করেন। বিশেষভাবে আমন্ত্রণে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আ,স,ম ফিরোজ, মোছা. মাহাবুব আরা গিনি, মেহের আফরোজ, মো. আব্দুস শহীদ, আ.ফ.ম রুহুল হক, মো. হাবিবে মিল্লাত, উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, মোছা. শামীমা আক্তার খানম, শামীম হায়দার পাটোয়ারী এবং আরমা দত্ত।

বৈঠকে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ এবং যৌন হয়রানি বন্ধে হাইকোট বিভাগের নির্দেশনা বাস্তাবায়নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পার্লামেন্টারিয়ানস অন পপুলেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট (বিএপিপিডি) এর সদস্যগণের সাথে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্যগণের পরামর্শ বিষয়ক কর্মশালায় বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ এবং যৌন হয়রানি বন্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর জোর দেওয়া হয়।

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক এবং দুই বিভাগের অধীনস্থ সংস্থাসমূহের প্রধানগণ ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর