খাবেন চিংড়ি-ডিম-মুরগির চপ?

জেলা, জাতীয়

হাসান মাহমুদ শাকিল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-22 22:29:57

‘খাবেন, চিংড়ির চপ, ডিমের চপ, মুরগির চপ? একবার খেলে বারবার খেতে মন চাইবে। বেশ সুস্বাদু খাবার।’ ঠিক এই কথাগুলো ভেসে আসছিল সুমন ভূঁইয়ার কণ্ঠ থেকে।

তেলে ভাজা বাইরের এসব খাবার স্বাস্থ্যসম্মত না হলেও নাম শুনলেই মানুষের জিভে পানি এসে যায়। অস্বাস্থ্যকর জেনেও রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে এসব খাবার খেয়ে মানুষ তৃপ্তি পায়। উড়ে এসে খাবারে পড়া ধুলাবালির কথাও তখন মনে থাকে না।

সোমবার (২৯ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে লক্ষ্মীপুরের চক বাজার মসজিদ মার্কেটের সামনে তার সঙ্গে দেখা হয়। এ সময় তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি খুব খুশি হন। এমনকি কোনো কিছু জিজ্ঞেস না করতেই নিজ থেকে অনেক কথা বলেছেন তিনি।

তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১২ বছর ধরে তিনি তেলে ভাজা খাবারগুলো বিক্রি করে আসছেন। প্রথমে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নিজ এলাকায় তিনি এ ব্যবসা শুরু করেন। এরপর ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় গিয়ে তিনি ফেরি করে খাবারগুলো বিক্রি করতেন। গত তিন বছর ধরে তিনি লক্ষ্মীপুর জেলা শহরে চিংড়ির চপ, ডিমের চপ, মুরগির চপ ও ডালের বড়া বিক্রি করে আসছেন। চিংড়ি ও মুরগির চপ ২০ টাকা, ডিমের চপ ১০ টাকা এবং ডালের বড়া ৫টাকা দামে বিক্রি করেন।

সুমন শীতকালে এখানে আসেন। ৪-৫ মাস ধরে জেলা শহরের চক বাজার, উত্তর স্টেশন, দক্ষিণ স্টেশন ও ঝুমুর এলাকায় তাকে খাবারগুলো বিক্রি করতে দেখা যায়।

প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত দুই চাকা ও দুই খুঁটি বিশিষ্ট একটি ভ্যান নিয়ে লক্ষ্মীপুর শহর ঘুরে বেড়ান। ভ্যানে একটি স্টোভ (চুলা), একটি কড়াই, একটি বড় পাতিল ও খাবারগুলো সাজানোর জন্য ৪টি ট্রে থাকে। খাবারগুলো বানানোর জন্য সামগ্রী বাসা থেকে তৈরি করে আনেন। পরে তাৎক্ষণিক তেলে ভেজে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন। ক্রেতারাও মজাদার খাবারগুলো খেতে তার দোকানের চারপাশে ভিড় জমায়।

সুমন টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানার মো. ফেরদৌসের ছেলে। তিনি এক মেয়ের বাবা। তার মেয়ের বয়স এক বছর। লক্ষ্মীপুর শহরের দক্ষিণ তেমুহনী এলাকায় স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে তিনি ভাড়া বাসায় থাকেন।

সুমন ভূঁইয়া জানান, সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত তিনি পড়ালেখা করেছেন। অভাবের সংসারে তার বাবার পক্ষে পড়ালেখার খরচ চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। এতে তার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। পরে বাবার দেওয়া স্বল্প পুঁজি নিয়ে তিনি এই ব্যবসাটি শুরু করেন।

তিনি আরও জানান, শীতকালে এসব খাবারের চাহিদা বেশি থাকে। শীতের সময়ই এখানে আসা হয়। এখানে ৪-৫ মাস থেকে আবার নিজগ্রামে ফিরে যান। বছরের অন্যান্য সময় নিজ এলাকায় এ ব্যবসাটি করেই জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর