ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের হিন্দু পল্লীতে হামলা করে মন্দির ভাঙচুর মামলার চার্জশিটভুক্ত দুই আসামিকে দেওয়া মনোনয়ন বাতিল করেছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।
বুধবার রাতে তাদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। তবে বিষয়টি বৃহস্পতিবার রাতে জানাজানি হয়।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নাসিরনগর উপজেলার সদর ও হরিপুর ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তাদের মনোনয়ন দেয়। তারা হলেন- দেওয়ান আতিকুর রহমান ও আবুল হাসেম।
আতিকুর রহমান উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা। তিনি ২০১৬ সালে নাসিরনগরে মন্দির ও হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনার অন্যতম হোতা।
আবুল হাসেম সদর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহপ্রচার সম্পাদক। তিনি প্রয়াত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হকের ভাগনে। হামলার ঘটনার পর তাকে দল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিল জেলা আওয়ামী লীগ।
বর্তমানে নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আবুল হাসেমের পরিবর্তে সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য পুতুল রানী বিশ্বাস এবং হরিপুর ইউনিয়নে দেওয়ান আতিকুর রহমানের পরিবর্তে মো. ওয়াসিম আহমেদকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার এই দুই ইউনিয়নে প্রার্থী পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর ফেসবুকে গুজব রটিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তত ১০টি মন্দিরসহ শতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় নাসিরনগর গৌরমন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল চৌধুরী বাদী হয়ে দুই থেকে আড়াই হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন।
তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শওকত হোসেন ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর ২২৮ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। চার্জশিটে ২২৮ আসামির মধ্যে নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক মো. আবুল হাসেম এবং হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমানের নামও উল্লেখ করা হয়। উভয়েই বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।