লক্ষ্মীপুর পৌরসভা নির্বাচনে তথ্য গোপন করে ৪নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন মোহাম্মদ আবুল কালাম। তিনি বর্তমান কাউন্সিলর। নির্বাচনী হলফনামায় নিজ নামে থাকা সম্পত্তির বিষয়ে কোন তথ্য উপস্থাপন করেননি। যদিও তার রয়েছে মালিকানা সম্পত্তি। এ নিয়ে পৌর এলাকায় চলছে ব্যাপক আলোচনা। অন্যদিকে আবুল কালামের প্রার্থিতার বৈধতা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেছে তার প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষ।
এ ঘটনায় রোববার (৭ নভেম্বর) জেলা প্রশাসক ও আপিল কর্তৃপক্ষ, পৌর নির্বাচন-২০২১ বরাবর তথ্য গোপন করার অভিযোগে আবুল কালামের প্রার্থিতা (মনোনায়নপত্র) বাতিলের জন্য আপিল আবেদন করেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. মুরাদ হোসেন।
আপিল বিবরনীতে জানা যায়, পৌর ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল কালাম এর নামে ৩৭৯৮নং দলিলে ৩১ শতাংশ সম্পত্তি রয়েছে। যাহার বর্তমান বাজার মূল্য ৩২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। তিনিসহ ৫ ভাইয়ের নামে ৩২৮১/১৩ নং দলিলে তাহার ১.১০ শতাংশ সম্পত্তি (দোকানঘর) রয়েছে। এর মধ্যের প্রার্থী কালামের অংশেই মালিকানা রয়েছে ১২ লাখ টাকার সম্পত্তি। এছাড়াও তাহার জমাকৃত লাখ লাখ টাকার বিষয় তিনি নির্বাচনী হলফনামা ও আইকর রিটার্ন ফাইলে উল্লেখ করেন নি। যা প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য। তাই তাহার প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানানো হয়।
এদিকে স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন- বিভিন্ন মহলে প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন কাউন্সিলর হয়ে আসছেন এই ব্যবসায়ী। নামে বেনামে রয়েছে তার অনেক সম্পদ। এর পরেও সম্পদ বিবরনিতে নিজের নামে কোন সম্পদ না দেখিয়ে বৈধ প্রার্থী হয়ে গেলেন। যা স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) নির্বাচন বিধিমালা ২০১০ লঙ্ঘন।
জানা গেছে, আগামী ২৮ নভেম্বর (২০২১) লক্ষ্মীপুর পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল অনুযায়ী জেলা নির্বাচন রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন আগ্রহী পদ প্রার্থীরা। বহুল আলোচিত এই পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৬ জন এবং কাউন্সিলর পদে ৮১ জন ও সংরক্ষিত নারী আসনে ২০ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষনা করে নির্বাচন কমিশন।
এর মধ্যে হলফনামায় তথ্য গোপন করেও ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল কালাম বৈধ প্রার্থী হয়ে গেছেন। যা নির্বাচন নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠছে। তবে এই বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করেছে আবুল কালামের প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষ। এনিয়ে জেলা প্রশাসক ও পৌর নির্বাচন ২০২১ আপিল কর্তৃপক্ষের নিকট আপিল আবেদন করেছে পক্ষটি।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে- কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে হলফনামায় তথ্য গোপন করায় ৯ জন ও ঋণ খেলাপীর দায়ে ৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
হলনফনামায় তথ্য গোপনের বিষয়ে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা স্বপন কুমার ভৌমিক বলেন, কোনো প্রার্থী হলনফনামায় তথ্য গোপন করতে পারেন না। বিষয়টি প্রমাণিত হলে প্রার্থিতা বাতিল হতে পারে। তবে এ বিষয়ে কিছু নিয়ম রয়েছে।
তিনি জানান, মনোনয়ন বাছাইয়ের শেষ তারিখের পর তিন দিনের সময় দেয়া হয় আপিলের জন্য। এই তিন দিনের ভেতরে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অভিযুক্ত প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট নিয়মে জেলা প্রশাসনের আপিল বিভাগে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।
হলফনামায় তথ্য গোপনের বিষয়ে আবুল কালাম বলেন, বাবার দেয়া সম্পত্তি বিক্রি করে বাজারে দোকান ক্রয় করেছি। তবে পূর্বের নির্বাচনের হলফনামায় সম্পত্তির তথ্য না দেয়া নিয়ে কোন সমস্যা হয়নি। তাই এবারও দেই নি। বিষয়টি নিয়ে এখন ঝামেলা হবে জানা ছিলো না।