আগামী ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে এবং এ প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘ যুক্ত থাকবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক। সব ঠিক থাকলে প্রথম ব্যাচে ৪৮৫ পরিবারের ২ হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গা কক্সবাজারের শিবির থেকে তাদের নিজেদের বসত-ভিটা মিয়ানমারে যাওয়ার কথা রয়েছে।
শনিবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে ফরেন সার্ভিসএকাডেমীতে কূটনৈতিক সংবাদদাতাদের সাথে মতবিনিময় শেষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। এসময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ঢাকায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে যৌথওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রোহিঙ্গাদের যে তালিকা হস্তান্তর করা হয়েছে, সেই তালিকাএকইদিন জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর’কেও হস্তান্তর করা হয়েছে।তাই এটা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির কোনো কারণ নেই।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে আমরা মিয়ানমারকে ২২ হাজার৪৩২ জন রোহিঙ্গার নতুন একটি তালিকাও হস্তান্তর করেছি। ১৫ নভেম্বর প্রথম দফায়প্রত্যাবাসন শুরু হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি। কারণ সভায় ঠিক হয়েছে যে,তালিকা হস্তান্তরের ১৫ দিনের মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রত্যাবাসন শুরু হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ভারত মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জন্য ২৮৫টিবাড়ী বানিয়েছে আর চীন ১ হাজার বাড়ি তৈরির সরঞ্জাম এনেছে। প্রথম ব্যাচেরপ্রত্যাবাসন শুরু হলে ধারাবাহিকভাবে বাকিরাও ফিরে যাবে। ইতিমধ্যে মিয়ানমার ৪টি আইডিপি ক্যাম্পও বন্ধ করে দিয়েছে বলে আমাদের জানিয়েছে।অন্যদিকে, ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেড ক্রস (আইসিআরসি) দুই দেশের সীমান্তেরশূন্য রেখায় বসবাসকারী সাড়ে ৪ হাজার রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নেয়ার কাজ দ্রুত শুরুকরবে। তাদের আগের বসত-ভিটা ধ্বংসপ্রাপ্ত না হওয়ায় তারা সরাসরি ফেরত যেতে পারবেন।
শহিদুল হক বলেন, গত সপ্তায় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের (জেডব্লিউজি) ৩য় বৈঠকশেষে জেডব্লিউজি’র সম্মিলিত দল কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে যায়। সেখানে রোহিঙ্গাদের সাথে মিয়ানমারের জেডব্লিউজি’র সদস্যরা কথা বলেন। মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব তাদেরকে নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে, দেশে ফিরে গেলে তারা চলাফেরা, শিক্ষা,চিকিৎসা ও কাজের সুযোগ পাবেন। আপনারা জানেন, বহু আগেই জাতিসংঘের সব সংস্থা বিশেষ করে ইউএনএইচসিআর এরসাথে এ নিয়ে চুক্তি করা হয়েছে। মিয়ানমারও অনুরুপ চুক্তি করেছে। বাংলাদেশ সরকার ঠিক করেছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ প্রক্রিয়া শুরু করবে। যখন দেশটির সদস্যরা ক্যাম্প ভিজিটে গেছে সেখানে ইউএনইএচসিআর এবং অন্যান্য সংস্থার সাথে বসেছেন এবং তাদের প্রশ্নের জবাবও মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব দিয়েছেন।