এক মাসে নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত ৪৭

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা | 2023-08-26 02:43:31

ভোটগ্রহণ শুরুর আগেই ভোরে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে টেটা, আগ্নেয়াস্ত্র ও ককটেল নিয়ে নরসিংদীর রায়পুরায় আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষের লোকেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আশরাফুল হকের সমর্থকদের গুলিতে প্রতিপক্ষের দুই জন মারা যান। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী রাতুল হোসেনের সমর্থকদের হামলায় আশরাফুল হকের একজন সমর্থক নিহত হন। ঘটনাটি ১১ নভেম্বরের দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ ভোটের দিনের।

একই দিন কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় পুলিশের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে গুলি চালানোর ঘটনাও ঘটেছে। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে বল্লভেরকান্দি গ্রামের এক ব্যক্তি মারা যান। একই দিন কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকূল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদের দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত ও পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

শুধু নরসিংদী, কুমিল্লা আর কক্সবাজারে নয়, গত নভেম্বর মাসে সারাদেশে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ও পৌরসভাকেন্দ্রিক ৯৮টি নির্বাচনী সহিংসতায় অন্তত ৪৭ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা মানবাধিকার সংস্কৃতি ফোরাম (এমএসএফ)।

গত মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সংস্থাটির এক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুলতানা কামাল স্বাক্ষরিত ওই পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে ১১টি জাতীয় গণমাধ্যম ও নিজস্ব তথ্যানুসন্ধানের ভিত্তিতে।

এমএসএফ জানায়, নভেম্বর মাসে ৯৮টি নির্বাচনী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়েছে ৭৮ জন। এ ছাড়া পাঁচ শরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত ৪৭ জনের মধ্যে ১৬ জন প্রতিপক্ষের গুলিতে এবং চারজন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান। তাঁদের প্রায় সবাই ভোটে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের সমর্থক বা কর্মী।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচনী সহিংসতায় সবচেয়ে বেশি নরসিংদী জেলায় ১১ জন নিহত হয়েছেন। নীলফামারীতে নির্বাচনপরবর্তী সময়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ছয়টি বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হয়েছে।

ইউপি নির্বাচনের প্রথম তিনটি ধাপে ভোটের আগে-পরে এবং ভোটের দিন গোলযোগ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। বেশ কিছু নির্বাচনী এলাকায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে এবার।

তৃতীয় ধাপে ভোটগ্রহণের দিন আগের ধাপের চেয়ে গোলযোগ, সহিংসতা ও প্রাণহানি তুলনামূলক কম হলেও লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, নেত্রকোনা, সাতক্ষীরা, ফেনীসহ অনেক এলাকায় অনিয়ম, দখলসহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত মাসে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সঙ্গে কথিত ‘ক্রসফায়ার’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৯ জন নিহত হয়েছেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া ১৩৯ জন নারী এবং ১৩৮টি শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর