বিএনপি নেতাকে ফুলের মালা দিয়ে আ.লীগ নেতার বরণ!

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বগুড়া | 2023-08-31 15:58:17

বগুড়ায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান শফিক। এনিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা।

নৌকার প্রার্থী রিজু হোসেন তার পরাজয়ের জন্য আওয়ামী লীগ নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে দায়ী করে বলেছেন নির্বাচনের পরদিন বিএনপি নেতাকে ফুলের মালা দেওয়ার ঘটনাই প্রমাণ করে তিনি কার পক্ষে কাজ করেছেন।

গত রোববার (২৮ নভেম্বর) বগুড়া সদর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে নিশিন্দারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক শহিদুল ইসলাম। মোটরসাইকেল প্রতীকে তিনি ভোট পেয়েছেন ৬ হাজার ৯৯২। এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী যুবলীগ নেতা রিজু হোসেন নৌকা প্রতীকে ভোট পেয়েছে ১ হাজার ৬১২। নির্বাচনের পরদিনই বগুড়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান শফিকের সাথে দেখা করেন বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলাম । এসময় নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলামকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান শফিক। পরদিন এই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পরপরই শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা। অনেকই বিরূপ মন্তব্য করে পোস্ট দেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

বগুড়া সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক এমদাদুল হক রাব্বী বলেন, আমি ২০১৬ সালে ধানের শীষের বিরুদ্ধে নির্বাচন করে ২ হাজার ৩০১ ভোট পেয়েছিলাম। এবারও প্রার্থী হতে আগ্রহী ছিলাম। কিন্তু বিএনপি নেতাসহ স্থানীয় এমপি সাহেব শহিদুলের বিরুদ্ধে নির্বাচন করতে নিষেধ করেছেন। একারণে আমি এবার নির্বাচন করিনি। রাব্বী আরও বলেন, এবার ধানের শীষ প্রতীক ছিল না। আমি নির্বাচন করলে জয়ী হতে পারতাম।

বগুড়া সদর উপজেলার নিশিন্দারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ আলী খোকা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পরামর্শে আমি গত আড়াই বছর ধরে এলাকায় নির্বাচনী প্রস্তুতি গ্রহণ করি। লোকজনের কাছে প্রার্থী হওয়ার বিষযটি প্রচার করি। কিন্তু মনোনয়ন পেল আরেকজন। তিনি বলেন, নৌকা মার্কার জন্য আমার নাম ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল কিনা সে বিষয়েও সন্দেহ রয়েছে।তারপরেও আমি মনোনয়ন জমা দেই। কিন্তু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দলের বিরুদ্ধে নির্বাচন করতে নিষেধ করেন।

তিনি বলেন, বিএনপি নেতা শহিদুলকে ভোটে পাশ করানোর জন্যই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কৌশল করে আমাকে বাদ দিয়ে দুর্বল প্রার্থী রিজুকে নৌকা মার্কা পেতে সহযোগিতা করেছেন। তিনি বলেন, এবার ধানের শীষ প্রতীক ছিল না, আমি নৌকা মার্কা পেলে শহিদুলের পরাজয় হতো। একারণে আওয়ামী লীগ নেতারা চাননি আমি প্রার্থী হই।

নৌকা মার্কার প্রার্থী রিজু হোসেন বলেন, বগুড়ায় বিএনপির সাথে লিঁয়াজো করে রাজনীতি করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান শফিক। নির্বাচনে তিনি নৌকা মার্কার পক্ষে কাজ না করে গোপনে বিএনপি নেতার জন্য কাজ করেছেন। শফিকের ইন্ধনে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কোনও নেতা কর্মী নৌকার পক্ষে কাজ করেনি। তিনি আরও বলেন, ভোটের পর নির্বাচিত বিএনপি নেতাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করার ছবি দেখেই বোঝা যায় তিনি কার পক্ষে কাজ করেছেন।

নিশিন্দারা ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি পরপর তিনবার নির্বাচিত হলাম। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে আবু সুফিয়ান শফিককে আমি নিজেই ফুলের মালা দিয়েছি। এটা আমার নৈতিক দায়িত্ব।

বগুড়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান শফিক বলেন, কে কি বললো এটা দেখা বা শোনার টাইম আমার নাই!

এ সম্পর্কিত আরও খবর