বঙ্গবন্ধুর শাসনব্যবস্থা নিয়ে গবেষণা করতে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রীর আহ্বান

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-29 05:42:12

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনব্যবস্থার বিভিন্ন দিক নিয়ে গবেষণা করতে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে শনিবার (৪ ডিসেম্বর) ঢাকার বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সরকারি কর্মকর্তাদের অবদান সম্পর্কে একটি স্মৃতিচারণমূলক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু দেশ স্বাধীনই করেননি, দেশ কীভাবে চললে উন্নত ও মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে তার পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনাও দিয়ে গেছেন।

আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু কেবল ক্যারিশম্যাটিক নেতাই ছিলেন না, কূটনীতিক হিসেবেও অনন্য ছিলেন তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের মিত্রবাহিনীর সদস্যরা এখনও বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছে, কিন্তু বঙ্গবন্ধু মাত্র ৩ মাসের মধ্যে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সদস্যদের নিজ দেশে ফেরত পাঠান। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ তিনি স্বল্প সময়ের মধ্যে পুনর্গঠন করেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু পৃথিবীর অন্যতম সেরা সংবিধান প্রণয়ন করেন, এমনকি একটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষা, স্বাস্থ্যের পাশাপাশি গবেষণা, এমনকি প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জনের জন্যও উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এ জন্য তিনি বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নত হতো।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে শোষণ-বৈষম্যহীন রাষ্ট্রে পরিণত করা। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। প্রতিমন্ত্রী এ সময় উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রেখে দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে সরকারি কর্মচারীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে কাজ করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক- ই- ইলাহী চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি এবং সাবেক সচিব মো. শাহজাহান সিদ্দিকী, বীর বিক্রম মুক্তিযুদ্ধে সরকারি কর্মকর্তাদের অবদান সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করেন।

এ সময় বক্তারা স্বাধীনতা যুদ্ধে সরকারি কর্মকর্তাদের সরাসরি অংশগ্রহণ, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্ব জনমত গঠন, মুজিবনগর সরকারে দায়িত্ব পালন, মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র সংগ্রহে সহযোগিতা, আশ্রয় প্রদান ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের কথা স্মরণ করেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম। বিয়াম ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. এম. মিজানুর রহমান অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধে সরকারি কর্মকর্তাদের অবদানের ওপর একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এছাড়া স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের বিশিষ্ট শিল্পীবৃন্দ অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

স্মৃতিচারণের পাশাপাশি বিয়াম ফাউন্ডেশনের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দফতর/সংস্থার সেবাসমূহ নিয়ে একটি মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর