স্বীকৃতির আনন্দে মাতোয়ারা হিজড়ারা

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-11 18:46:19

২০১৩ সালের নভেম্বর মাসের আজকের এই দিনে (১১ নভেম্বর) প্রথমবারের মতো পেয়েছিল রাষ্ট্রীয় পরিচয়। দীর্ঘদিনের সামাজিক নানা প্রতিবন্ধকতাকে পাশ কাটিয়ে এই স্বীকৃতি তাদের দিয়ে নতুন করে বাঁচার আশা। কেননা আগে দেশের নাগরিক হিসেবে কোনো পরিচয়ই ছিল তাদের এ দেশে জন্মগ্রহণ করেও। তাই পেতেন না কোনো ধরনের রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধাও।

তাই গত বছর আগে ঘটে যাওয়া সেই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত ও দিনটিকে নানা আয়োজনে উদযাপন করছে হিজড়া জনগোষ্ঠী। দিনটি তারা হাতে মেহেদি রাঙিয়ে ও সেলফি উৎসব করে কাটিয়েছে। তাদের এমন উৎসবের কারণ, তারা এখন অন্য দশজনের মতোই দেশের গর্বিত নাগরিক।

রোববার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর দুর্ঘটনা স্মৃতিস্থাপনা, ছবির হাট ও ইডেন মহিলা কলেজের ফুটপাতসহ ৬টি স্থানে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পাওয়ায় এমন উৎসব আনন্দে মেতে উঠেছে দেশের হিজড়া জনগোষ্ঠী।

রাজধানীর ৬টি স্থানে হিজড়াদের নিয়ে এই মেহেদি ও সেলফি উৎসবের আয়োজন করে গবেষণা ও সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘রি-থিংক।’

সরেজমিনে দেখা গেছে, এই ৬ স্থানে হিজড়ারা বিভিন্ন রঙয়ের শাড়ি পড়ে পরিপাটি করে সেজে এসেছেন। নিজেরা দলবেঁধে যেমন সেলফি তুলছেন, তেমনি আগত দর্শনার্থীদের সঙ্গেও সেলফি তুলেছেন। দেখা গেছে আগত দর্শনার্থীদের হাতে ভালোবেসে মেহেদিও লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে বলা চলে, উৎসবের এই আমেজে যেমন হিজড়া জনগোষ্ঠীর মানুষ মজে ছিলেন, তেমনি আগত দর্শনার্থীরাও খোলামনে এই উৎসবে নিজেদের ভাসিয়ে দিয়েছেন আপন মনে।

আয়োজকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে জানা গেছে, সরকার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিলেও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির আরও পরিবর্তন প্রয়োজন। কেননা শুধুমাত্র আইন প্রয়োগ করেই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। তাই সমাজের সব মানুষদের মতো তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরাও যে তাদেরই একজন সে লক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

ঢাবির চারুকলা অনুষদের সামনে চলা সেলফি ও মেহেদি উৎসবে আসা সোনালী হিজড়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, সরকার আমাদের জন্য এগিয়ে এসেছে। মানুষের অবস্থানের পরিবর্তন আসছে। আমি মনে করি, এ ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাজের সবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও ভালো হবে।

রাজধানীর ইডেন মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আয়োজিত উৎসবে আগত হিজড়া ডায়না বার্তা২৪.কমকে বলেন, মানুষ নানা কারণে আমাদের শুধু শুধু ভয় পায়। আমরাও এই সমাজেরই একজন, তাহলে আমাদের কেন ভয় পাবে? আমরা মনে করি, এমন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সবার ভয়ভীতি দূর হবে বলে আশা করছি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর