ওমিক্রন রোধে বেনাপোল বন্দরে সুরক্ষা জোরদার

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল(যশোর) | 2023-08-24 15:10:21

করোনার নতুন ধরণ ওমিক্রনের সংক্রমণ  রোধে দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল স্থল বন্দরে সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। এতে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে বন্দর।  প্রথম দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে ৪ মাস এপথে আমদানি, রফতানি বাণিজ্য বন্ধ থাকায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ্ হয়েছিল ব্যবসায়ীরা। এতে এবার ব্যবসায়ীরা আগাম  সুরক্ষা জোরদারের দাবি জানালে বাড়ে বন্দরে সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা। তবে আরও নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি ব্যবসায়ী নেতাদের।

সি অ্যান্ড এফ ব্যবসায়ী রুবেল হোসেন জানান, বন্দরে করোনা সংক্রমণ রোধে শতভাগ স্বাস্থ্য বিধি মানার কথা থাকলেও অনেকে তা মানছে না। ভারতীয় ট্রাকে জীবাণু নাশক স্প্রে করা হলেও মাস্ক ছাড়া অনেক শ্রমিক ও  ভারতীয় ট্রাক চালক বন্দর এলাকায় চলাফেরা করছে। নিরাপত্তা কর্মীদের তদারকিও অনেকটা গা ছাড়া ভাব। এতে চালক ও  শ্রমিকদের মাধ্যমে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন ছড়ানোর ভয় বাড়ছে।

যশোর জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনসহ কোভিড ১৯ আক্রান্তের হার  বেড়ে যাচ্ছে। এতে সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে। মাস্ক ছাড়া বন্দর ও ইমিগ্রেশন এলাকায় কোন ভাবে চলাচল করা যাবে না। বন্দর শ্রমিকরা যাতে যথাযথ ভাবে স্বাস্থ্য বিধি মানে সেদিকে নজরদারী বাড়াতে হবে। যদি সংক্রমণ বেড়ে যায় তবে ভারত ফেরত যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন চালুর সব প্রস্তুতি রাখা দরকার। কেউ স্বাস্থ্য বিধি না মানলে প্রয়োজনে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা করা হবে। ইতিমধ্যে এসব বিষয়ে বেনাপোল বন্দর,কাস্টমস,পুলিশ প্রশাসন,জনপ্রতিনিধি ও আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ীদের সাথে এক মত বিনিময় সভায় সুরক্ষা জোরদারে নির্দেশ দেওয়া  হয়েছে জানান তিনি।

বেনাপোল বন্দরের আমদানি,রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে হঠাৎ করে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। সেখানে ইতিমধ্যে ভয়াবহতা রোধে স্কুল,কলেজ বন্ধ করা হয়েছে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে জরুরী চিকিৎসা,ব্যবসা ও শিক্ষা গ্রহণের কাজে প্রতিদিন পাসপোর্ট যাত্রী দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত ও আমদানি,রফতানি বাণিজ্য চালু রয়েছে।  তাই এখানে সুরক্ষা আরও জোরদার করতে হবে। ভারতীয় ট্রাক চালক যেন অপ্রয়োজনে বন্দরের বাইরে না আসে এবং বাংলাদেশি ট্রাক চালকেরা ভারতে প্রবেশ কালে যেন শতভাগ সুরক্ষা মানে নিশ্চিত করতে হবে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ভারতে করোনা আক্রান্তের অবস্থা আবারো ভয়াবহ অবস্থার দিকে যাচ্ছে। বন্দরে সুরক্ষা ব্যবস্থা সন্তোষ জনক না।  সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সংক্রমণ বাড়লে আবারো বাণিজ্য বন্ধের শঙ্কা রয়েছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল অফিসার আজিম উদ্দিন  বলেন, ওমিক্রন রোধে ভারত ফেরত করোনার সন্দেহ ভাজন ৬৫ জন  যাত্রীদের শরীরের নমুনা নিয়ে র‍্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষা করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন করোনা পজিটিভ ছিল। তবে তারা শরীরে ওমিক্রন বহন করছে কিনা তা পরীক্ষার পরে বোঝা যাবে। আক্রান্তরা যশোর সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটের রেড জোনে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

বেনাপোল বন্দরের উপ পরিচালক আব্দুল জলিলের দাবি  মাঝে করোনা রোধে বন্দরে সুরক্ষা ব্যবস্থা শিথিল থাকলেও এখন  ওমিক্রন রোধে তা জোরদার করা হয়েছে। ভারতীয় ট্রাক বন্দরে প্রবেশ কালে জীবাণু নাশক স্প্রে করা হচ্ছে। মাস্ক বিতরণ ও সতর্কতায় প্রচার প্রচারণা করা হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিদিন ভারত থেকে সাড়ে ৩শ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হচ্ছে। 

বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি মো. রাজু জানান, ওমিক্রনের কারণে ভারত অংশে কড়াকড়িতে এপথে কমেছে পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত।  টুরিস্ট ভিসা বন্ধ। মেডিকেল,বিজনেস ও শিক্ষা ভিসায় যাত্রী যাতায়াত করছে।  বর্তমানে  বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিনে ৫ থেকে ৬শ জনের মত ভারত ভ্রমণ করছে। ভারতীয়রা দেশে আসছে দিনে দেড়শ থেকে ২শ জন। ভারত ভ্রমণে প্রয়োজন হচ্ছে আরটিপিসিার থেকে পরীক্ষা করানো ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করোনা নেগেটিভ সনদ ও ভারতে থেকে ফিরতে লাগছে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নেগেটিভ সনদ।

  

এ সম্পর্কিত আরও খবর