মাস্ক ছাড়াই চলাচল

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা | 2023-08-31 11:31:37

মাস্ক পরেননি কেন? জানতে চাইলে রিকশাচালক মুক্তার বলেন, মাস্ক পরে কি হবে? করোনা-টরোনা আমাদের হবে না। মাস্ক পরলে দম বন্ধ হয়ে আসে জানালেন ষাটোর্ধ্ব পথচারী আবুল কাশেম। তিনি বলেন, যখন একটু বেশি ভিড় দেখি তখন মাস্ক পরি। বাজার করতে আসা তরুণ সাজ্জাদ বলেন, ঘেমে মাস্ক ভিজে গেছে তাই খুলে রেখেছি।

করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হলেও এখনও অনেক মানুষ সেটি মানছেন না। বিধিনিষেধ কার্যকরের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার চিত্র ছিল প্রথম দিনের মতোই। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিনোদনকেন্দ্র, শপিংমল, কাঁচাবাজারগুলোতে ছিল ভিড়, গণপরিবহনে যাত্রী ও পরিবহনকর্মীদের বেশিরভাগের মুখেই ছিল না মাস্ক। জুমার নামাজে মসজিদে আসা মুসল্লিদের অনেককেই মাস্ক পরতে দেখা যায়নি।

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, শপিং মলগুলোতেও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। নগরীর বেশিরভাগ গণপরিবহনেও দাঁড়িয়ে যাত্রী নিতে দেখা গেছে। অর্ধেকের বেশি যাত্রীর আবার মুখে ছিল না মাস্ক। সকাল থেকে রাজধানীর মিরপুর, ইসিবি চত্বর, কুড়িল, মহাখালী, ভাসানটেক এলাকায় আসা বেশিরভাগ মানুষ মুখে মাস্ক লাগায়নি। রেস্তোরাঁয় বসে খাবার খেতে আসা কাউকে টিকার সনদ দেখাতে হয়নি। স্বাস্থ্যবিধি এবং মাস্ক পরার বিষয়ে মসজিদে আসা মুসল্লিদের মধ্যে সচেতনতা থাকলেও অনেকের মুখে মাস্ক ছিল না।

মাস্ক পরেননি কেন? জানতে চাইলে রাজধানীর মানিকদী এলাকার রিকশাচালক মুক্তার আলী বার্তা২৪.কমকে বলেন, মাস্ক পরে কি হবে? করোনা-টরোনা আমাদের হবে না। কেন হবে না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা তো বড়লোকদের রোগ। এটা আমাদের মতো গরিবদের হবে না।

মাস্ক পরলে দম বন্ধ হয়ে আসে জানালেন বাগানবাড়ি এলাকার ষাটোর্ধ্ব পথচারী আবুল কাশেম। মাস্ক হাতে নিয়ে কেন হাটছেন জানতে চাইলে বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, যখন একটু বেশি মানুষের ভিড় দেখি তখন মাস্ক পরি। ‌আমার বয়স হয়েছে, মাস্ক পরলে দম নিতে কষ্ট হয় আমার।

মাস্ক গলায় ঝুলিয়ে রাখছেন কেন? জানতে চাইলে মাটিকাটা বাজারে বাজার করতে আসা তরুণ সাজ্জাদ হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, মাস্ক তো পরিই। তবে এখন হাটতে হাটতে ঘেমে মাস্ক ভিজে গেছে তাই খুলে রেখেছি।

এদিকে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এক দিনে রোগী বেড়েছে ১ হাজার ১৯ জন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা) শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৩৭৮ জন এবং মৃত্যু হয় ৬ জনের। গত বছরের ২৬ আগস্ট এক দিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল ৪ হাজার ৬৯৮ জন। অর্থাৎ সাড়ে ৫ মাস পর আবারও রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়াল। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার ৩ হাজার ৩৫৯ জন শনাক্ত হয়েছিল এবং মৃত্যু হয় ১২ জনের।

গত সোমবার ১১ দফা বিধিনিষেধসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়, বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে এ বিধিনিষেধ কার্যকর হবে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে। বিধিনিষেধ চলাকালে বাস-ট্রেন ফের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলবে। উন্মুক্ত স্থানে যেকোনো সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান কিংবা রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করা যাবে না। দোকান, শপিংমল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং হোটেল-রেঁস্তোরাসহ সব জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরিধান করতে হবে। অন্যথায় তাকে আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।  

এ সম্পর্কিত আরও খবর