সোনামুল গ্যাংয়ের খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত এলাকাবাসী

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ | 2023-08-27 15:47:32

নওগাঁর রাণীনগরে সোনামুল নামের এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীর গ্যাংয়ের খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে অনেক মানুষ বুলবুলি নামের আর এক মাদক ব্যবসায়ী মেয়েই হচ্ছে সোনামুল গ্যাংয়ের প্রধান হাতিয়ার।

বুলবুলি ওরফে বুলির প্রেমের ফাঁদে ফেলে ইতোমধ্যেই প্রায় শতাধিক মানুষকে ব্লাকমেইল করে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে সোনামুল গ্যাং।এছাড়া প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা, চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজী দখল ও বিভিন্ন মানুষকে র্টাগটে বানিয়ে তাদের কাছে অজান্তে মাদক কিংবা অস্ত্র রেখে পুলিশি হয়রানী ও মিথ্যে মামলার সমঝোতার নামে অর্থ আদায়সহ হাজারো অবৈধ কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামের সমতুল খন্দকারের ছেলে সোনামুল খন্দকার।এক সময় পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করা সোনামুল বর্তমানে বিভিন্ন এলাকার ১৮জন চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নিয়ে তৈরী করেছে এক ভয়ংকর কিশোর গ্যাং।

এই গ্যাংয়ের প্রধান হাতিয়ার আর এক মাদক ব্যবসায়ী বুলবুলি বিবি।স্বামী পরিত্যক্তা এই বুলবুলির প্রেমের ফাঁদে ফেলে চলছে সোনামুল গ্যাংয়রে ব্লাকমইেল কর্মকান্ড।প্রথমে এলাকার অর্থশালী, ব্যবসায়ী ও সম্ভ্রান্ত পরিবারের ব্যক্তিদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে বুলবুলিকে সরবরাহ করে সোনামুল।বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামধারী বুলবুলি ওই ব্যক্তির সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তোলার ২-৩ দিনের মধ্যে কোন এক বাসা বা পার্কে দেখা করার কথা বলে ডেকে নিয়ে অন্তরঙ্গ অবস্থায় ছবি তোলার পর প্ল্যানিং এর অংশ হিসেবে প্রস্তুত থাকা সাজানো ডিবি পুলিশ লোককে ভয়-ভীতি দেখিয়ে সবকিছু কেড়ে নিয়ে ব্লাকমেইল করে।

এরপর সমঝোতার নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় সোনামুল। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষকে র্টাগট করে তাদের বাড়িতে মাদক কিংবা অস্ত্র রেখে ব্লাকমইেল করে লাখ লাখ টাকা সমঝোতার নামে আদায় করে আসছে।

সোনামুল গ্যাংয়রে খপ্পরে পড়ে সমাজের বিভিন্ন শ্রেনীর শতাধিক মানুষ তাদের র্সবস্ব হারিয়ে এখন পথে পথে ঘুরছে।এলাকার মানুষরা র্বতমানে চরম আতঙ্কে রয়েছে যে কে কখন সোনামুল গ্যাংয়রে খপ্পররের শিকার হয়ে পড়ে।প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি,চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই এই গ্যাংয়রে নিত্যদিনের কাজ।

পুলিশ ও আদালতের খাতায় সোনামুল ও বুলবুলির নামে অর্ধশতাধিক মামলা থাকলেও প্রতিনিয়তই বহাল তবিয়তে এই গ্যাং তাদের কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।বর্তমানে এলাকাবাসী সোনামুলরে গ্যাংয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে চায়।

ভুক্তভোগী ঘোষ গ্রামের আ: কাদের মন্ডলের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, প্রথমে আমার ছোট ভাইকে ব্লাকমইেল করে সোনামুল গ্যাং।ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে আমি নিজেও বুলবুলির ফাঁদে পড়ে যাই।

এই ফাঁদ থেকে বাঁচতে লোক মারফত সোনামুল আমার কাছে ১০লাখ দাবী করে।পরে আমাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে বিভিন্ন সময় আমার কাছ থেকে প্রায় ৩লাখ টাকা আদায় করে সোনামুল গ্যাং।

বর্তমানে আমি আর আমার ছোট ভাই নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। আমি এই বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন লাভ হয়নি।

এছাড়া আতাইকুলা গ্রামরে মৃত ওছমানের ছেলে মোকলেছুর রহমান, দূর্গাপুর গ্রামের হাফেজ মো. কফোয়তে উল্লাহ, বাবুল সরদার, সোনামুলরে বড় ভাই সামিনুর খন্দকার সোনামুল গ্যাংয়রে শিকার হয়েছেন।

ভুক্তভোগী সামিনুর খন্দকার বলেন সোনামুল আমাকেও ছাড়নি। সোনামুল একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী।সে বর্তমানে আমার নির্মানাধীন বাড়ি জোরর্পূবক দখল করে সেখান থেকেই এই সব অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।সোনামুল বর্তমানে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে। প্রমাণাদিসহ থানা ও আদালতে মামলা করেও কোন লাভ হচ্ছে না। এ বিষয়ে সোনামুল পলাতক ও তার ফোন নম্বর বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

গোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক বলেন, সোনামুল গ্যাংয়ের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ।আমি প্রশাসনের সহযোগীতা নিয়ে চেষ্টা করছি সোনামুলের কর্মকান্ড বন্ধ করতে। কিন্তু তা আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়।প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ আর স্থানীয় মানুষের চেষ্টাই পারে সোনামুল গ্যাংকে নির্মূল করতে।

রানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহনি আকন্দ বলেন, সোনামুল একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী।আমি চেষ্টা করছি সোনামুলকে আটক করে আইনের হাতে সোপর্দ করতে কিন্তু সে ও তার দলের সদস্যরা পলাতক থাকায় আটক করা সম্ভব হচ্ছে না,তবে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মর্কতা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর