‘খোঁজ নিয়েছে ডিএনসিসি, তবে কোন আশ্বাস দেয়নি’

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,ঢাকা | 2023-08-24 07:51:47

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ময়লার গাড়ি চাপায় গত বছর ২৫ নভেম্বর মৃত্যু হয়েছিল সংবাদ কর্মী আহসান কবির খানের। দুর্ঘটনার পর অসহায় পরিবারটির দায়িত্ব নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম। তবে দুর্ঘটনার প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও, প্রতিশ্রুতি অনুসারে কবিরের পরিবারকে কোন প্রকার সহযোগিতা করেনি সিটি করপোরেশন।

রোববার (২৩ জানুয়ারি) একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে ডিএনসিসি। রোববার সন্ধ্যায় মেয়র আতিকুল ইসলামের বার্তা নিয়ে নিহত কবির খানের মগবাজারের সোনালীবাগের বাসায় গিয়েছিলেন ডিএনসিসির অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকি ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৈমুর রেজা (খোকন)। তারা নিহত আহসান কবির খানের স্ত্রী ও দুই সন্তানের সঙ্গে দেখা করে বলেন, ‘মেয়র আপনাদের খোঁজ নেওয়ার জন্য পাঠিয়েছে, আমরা খোঁজ নিতে এসেছি। মেয়র মহোদয় খুব ভালো মানুষ। তার কথায় আপনারা আস্থা রাখতে পারেন।’ উত্তরে নিহতের স্বজনেরা বলেন, আমরা তো আস্থা রেখে বসে আছি, সিটি করপোরেশন তো দুই মাসেও খোঁজ নেয়নি।

নিহত কবিরের স্বজন ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী রমজান হোসেন ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলেন, ‘আপনারা এতদিন আসেননি, এখন পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর কেন এসেছেন। এতদিন কিছু না করেও পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার খবর মিডিয়াতে প্রচার করেছেন। আজকে যেহেতু এসেছেন, কিভাবে অসহায় পরিবারটিকে সহযোগিতা করবেন, এই তথ্য কতদিনের মধ্যে জানাবেন।’ প্রতি উত্তরে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা শুধু খোঁজ নিতে এসেছি, কোন আশ্বাস দিতে পারবো না। যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার মেয়র মহোদয় নিবেন।’

দুর্ঘটনার পর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম নিহতের স্ত্রী নাদিরা পারভিনকে (৪০) সান্ত্বনা দিয়ে বলেছিলেন, ‘আপনি আমার ছোট বোন, আপনার পরিবারের সম্পূর্ণ দায়িত্ব আমি নিলাম। পরিবারের খরচ ও সন্তানদের পড়াশোনা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই।’

কবির খানের স্ত্রী নাদিরা পারভিন বার্তা২৪.কম কে বলেন, ‘পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম মানুষটির মৃত্যুতে আমরা অসহায় জীবন-যাপন করছি। সিটি করপোরেশনের মিথ্যা প্রচারণার কারণে স্বজন শুভাকাঙ্ক্ষীরা কেউ এগিয়ে আসেনি। সবাই ভাবছেন, আমরা বেশ ভালো আছি, মেয়র আতিকের অনুদান পেয়েছি। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে আমরা কিছুই পাইনি।’

গত ২৫ নভেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি কমপ্লেক্সের উল্টোদিকে ডিএনসিসি ময়লার গাড়ির চাপায় নিহত হন মোটরসাইকেল আরোহী কবির খান। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাদিরা পারভিন বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় একটি মামলা করেন। কবির একটি জাতীয় দৈনিকের কম্পিউটার বিভাগে চাকরি করতেন। চাকরির পাশাপাশি করতেন ব্যবসা। ঝালকাঠির গ্রামের বাড়িতে থাকা বৃদ্ধ মা-বাবা ও ঢাকায় স্ত্রী-সন্তানদের খরচ একাই বহন করতেন তিনি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির হঠাৎ মৃত্যুতে ভেঙে পড়ে তার পরিবার। পরিবারের খরচ নির্বাহ ও দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন তার স্ত্রী। ছেলে সাদমান শাহরিয়ার কাইফ (১৫) দশম শ্রেণিতে পড়ছে রাজধানীর ফয়জুর রহমান আইডিয়াল ইনস্টিটিউটে। মেয়ে সাফরিন কবির দিয়া (১০) পড়ছে একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চতুর্থ শ্রেণিতে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর