দেশে গত ১৩ বছরে কেউ না খেয়ে মারা যায়নি বলে মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশে এখন আর কোন মঙ্গা নাই। গ্রাম পর্যায়ে শহরের সুবিধা নেওয়া হচ্ছে। জনগণের আয় বৃদ্ধি ও জীবনমানের উন্নয়নের মাধ্যমে খাদ্য চাহিদা পূরণ করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় প্রান্তিক মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, করোনার অভিঘাত মোকাবিলায় সরকার কৃষিখাতে আগামী জুন নাগাদ ২৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিবে। যা ইতিপূর্বে ছিল ৮ থেকে ৯ হাজার কোটি টাকা। করোনার এই সময় সারা পৃথিবীতে সারের দাম বাড়লেও সরকার পূর্বের নির্ধারিত দামেই কৃষকদের সার সরবরাহ করছে। অভাব না থাকলে কেউ হাত পাতে না। কম্বল বা শাড়ির জন্য যেন এদেশে কেউ পদদলিত হয়ে মারা না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
শনিবার (২৯ জানুয়ারি) জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে রাজধানীর তেজগাঁওস্থ এফডিসিতে ‘নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে সরকারের পদক্ষেপ’ নিয়ে এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
তিনি বলেন, সরকার নিরাপদ খাদ্য সংক্রান্ত আইনের বাস্তবায়ন এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করেছে। আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও এর কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণের মাধ্যমে সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ করা হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের খাদ্যপণ্য রফতানির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুণগত মান রক্ষায় সরকার সচেষ্ট।
তিনি আরও বলেন, একসময় চিংড়ির মধ্যে তারকাটা ঢুকিয়ে ওজন বাড়িয়ে রফতানি করা হতো। যা ছিল লজ্জাজনক। বর্তমানে ল্যাবে পরীক্ষার মাধ্যমে গুণগতমান নিশ্চিত করে রফতানি করা হচ্ছে বিধায় এখন মাছ রফতানিতে আগের মতো লজ্জাকর অবস্থায় পড়তে হয় না। অনেক সময় যথাযথ তথ্যের অভাব ও পেশাগত অদক্ষতার কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাজারে অযাচিত হস্তক্ষেপ করে। বর্তমানে খাদ্য নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষাকে সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
নাগরিক সমাজের সম্পৃক্ততা ও গণমাধ্যমের ইতিবাচক প্রচারণা নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে পরিস্থিতি উত্তরণে সহায়ক হবে বলে জানান তিনি।
জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে আয়োজিত উক্ত প্রতিযোগিতায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মাঝে ট্রফি ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন ড. এস এম মোর্শেদ, মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ, সাংবাদিক সবুজ ইউনুস ও সাংবাদিক শেখ নাজমুল হক সৈকত।