সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে যাত্রী নিচ্ছে না ভারত

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ | 2023-09-01 22:49:13

করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সড়ক পথে ট্যুরিস্ট ভিসা চালু হলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারত যেতে পারছেন না পাসপোর্টধারী যাত্রীরা। তবে বিভিন্ন রুট দিয়ে ভারতে যাওয়া যাত্রীরা দেশে ফিরতে পারছেন এই ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে।

প্রতিদিন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্থান থেকে পাসপোর্টধারী যাত্রীরা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে এসে ভারত যেতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। তাদেরকে আকাশ পথে কিংবা অন্য রুট হয়ে ভারতে যেতে হচ্ছে। এতে সময় ও অর্থ দুটোই বেশি লাগছে।

সোনামসজিদ স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৫ মার্চ করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী যাতায়াত বন্ধ করে দেয় সরকার। করোনা সংক্রমণ কমে আসায় প্রায় ১৪ মাস পর ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের কার্যক্রম শুরু হয়। তবে এতে শুধুমাত্র ভারত থেকে পাসপোর্ট যাত্রীরা এই চেকপোস্ট ব্যবহার করে দেশে আসতে পারছেন। তবে ভারতের অভ্যন্তরে সমস্যার কারণে এই রুট ব্যবহার করে ভারতে যেতে পারছেন না পাসপোর্ট যাত্রীরা। সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন যাত্রী যেতে কোনো বাধা না দিলেও ভারতীয় ইমিগ্রেশন নিতে চায় না বলে জানা গেছে।

গত ১৫ মার্চ বেনাপোল হয়ে ভারতে গিয়ে আকাশপথে দেশে ফিরেছেন আমির আলী। স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে ১৩ দিন ভারতের চেন্নাইতে ছিলেন তিনি। আমীর আলী বলেন, সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাড়ি হওয়ার সুবাদে আমরা চিকিৎসার কাজে ঢাকা থেকে কাছে ও সুবিধা মনে করি ভারতে যাওয়াকে।করোনা পরিস্থিতি উন্নত হওয়ার পরও কেন সোনামসজিদ স্থলবন্দর চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশি যাত্রী প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না, তা আমাদের বোধগম্য নয়।

সম্প্রতি ভারতে ছেলের চিকিৎসা করিয়েছিলেন রাজনীতিবিদ হাম্মাদ আলী। তিনি জানান, কিছু দিন আগে চিকিৎসার জন্য আকাশপথে ভারতে গেছিলাম। সোনামসজিদ স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চালু থাকলে কম খরচ ও অল্প সময়ে আমি ভারতে যেতে পারতাম। কারণ এই পথে ওপারে গেলেই মালদা। এরপরে ট্রেনে খুব দ্রুত ও কম খরচে কলকাতা ও মাদ্রাজ যাওয়া যায়। কিন্তু এখান দিয়ে ভারতে প্রবেশের সুযোগ নেই।

ভারতীয় ভিসা প্রসেসিং ও সেখানকার চিকিৎসকদের সাক্ষাতের কাজ করে দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের রাজারামপুরের আতিক আলী। তিনি বলেন, করোনার কারণে বন্ধ হওয়ার পর এখনও খুলে দেওয়া হয়নি ভারতীয় ইমিগ্রেশন। যাদের চিকিৎসা চলমান ছিল, তারা এখান দিয়ে যেতে পারছেন না। এমনকি নতুন রোগীরা আরও বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনেকেই খোঁজ-খবর রাখছেন। চালু হলেই যাওয়া শুরু হবে। সবদিক বিবেচনায় ভারতীয় ইমিগ্রেশন চালুর দাবি জানান তিনি।

সোনামসজিদ স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক মোজাম্মেল হক বলেন, এই ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট বন্ধের কারণে আমরা সোনামসজিদ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা ভোগান্তির মধ্যে পড়েছি। কারণ আগে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট চালু ছিল। ভারতে গিয়ে মালামাল দেখে আমদানি করতাম, কিন্তু এখন আর তা হয় না। ভারতে পণ্য দেখায় একটা আর ব্যবসায়ীরা পাঠায় আরেকটা, এতে করে আমাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়।

সোনামসজিদ স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) জাফর ইকবাল বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত বছর মে মাসের দিকে সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের কার্যক্রম শুরু হয়। তবে শুধুমাত্র ভারত থেকে যাত্রীরা আসতে পারছেন এই ইমিগ্রেশন দিয়ে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে যেতে পারছেন না। ভারতীয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ যাত্রী গ্রহণ করতে অনীহা প্রকাশ করায় যাতায়াত শুরু হয়নি। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যাত্রী গ্রহণ করলেই যাতায়াত শুরু হবে। তবে বর্তমানে ভারত থেকে প্রতিদিন কয়েকজন করে যাত্রী বাংলাদেশে প্রবেশ করছে এই চেকপোস্ট দিয়ে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর