তপ্ত রোদে মহাসড়কে দায়িত্ব পালনে অনড় পুলিশ!

, জাতীয়

সোহেল মিয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী | 2023-08-26 15:48:52

চারিদিকে চলছে প্রচন্ড তাপদাহ। গ্রীষ্মের কড়া খড়াতাপে পুড়ছে পুরো দেশ। অতিরিক্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে। গরম থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যখন একফোটা শান্তির আশায় মানুষ ছুঁটছে প্রকৃতির কাছে। সুশীতল ছায়ায় নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছে অকাতরে। ঠিক সেই মুহূর্তে প্রচন্ড গরমের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে পিচঢালা মহাসড়কে দাঁড়িয়ে দায়িত্বে পালনে ব্যস্ত রয়েছে পুলিশ।

গায়ে পবিত্র পোশাক পড়ে দায়িত্ব পালনে অনড়  দাঁড়িয়ে আছেন তপ্ত রোদে। কখন নিজের গায়ের পোশাক ঘামে ভিজে গিয়েছে সেদিকে নেই একটু খেয়াল। তাদের মাথায় একটাই চিন্তা কিভাবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করা যায়। বলছিলাম দৌলতদিয়া ঘাটে ঈদে ঘরে ফেরা লাখো মানুষের জানমাল নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা রাজবাড়ীর পুলিশের কথা।


শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে দৌলতদিয়া ঘাটে গিয়ে সরেজমিন দেখা যায়, প্রিয়জনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামে ফিরছে হাজার হাজার মানুষ। আর এ সকল মানুষের জানমালের নিরাপত্তাসহ যাতে এরা নির্বিঘ্নে কোন রকম ভোগান্তি ছাড়াই ঘরে ফিরতে পারে সেই দায়িত্ব পালন সচেষ্ট রয়েছে পুলিশ সদস্যরা। দুপুরের তপ্ত খরাতাপে দাঁড়িয়ে থেকে দায়িত্ব পালন করছে তারা। টানা আট ঘন্টা রোদে দাঁড়িয়ে থেকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে তাদের।

দৌলতদিয়া ঘাটের ৫ নং পন্টুনের কাছে দায়িত্বে থাকা মোকলেছ নামের এক পুলিশ সদস্য বার্তা২৪.কমকে বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষ যাতে নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারে সেজন্য আমরা আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছি। এই দায়িত্ব পালনে আমাদের অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই। আপনারা দেখেছেন রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার স্যার নিজেই ঘাট এলাকাতে পরিদর্শন করছেন।


মানুষ যেখানে ঘরের মধ্যেই গরমে টিকতে পারছে না সেখানে এই রোদে সড়কে ৮ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কষ্ট মানে কি ভাই, সে রকম কষ্ট। কিন্তু কষ্টের থেকেও দায়িত্ব পালন আমাদের কাছে বড়। সকাল ৮ টায় এসে এখানে দাঁড়িয়েছি আর বিকাল ৪ টায় ব্যারাকে ফিরবো। আবার রাতে ডিউটি রয়েছে। প্রতিদিন ডিউটি থেকে ব্যারাকে ফিরে আগে গায়ের পোশাক ধুয়ে দেই। ঘামে পোশাক পুরো ভিজা থাকে।


এদিকে ঘাট এলাকাতে যাতে কোন মানুষ ভোগান্তিতে না পড়েন এবং তাদের জানমাল নিরাপত্তার জন্য রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার এমএম শাকিলুজ্জামান ঘাট পরিদর্শন করেছেন এবং ঘাটের উপর কড়া নজরদারি রেখেছেন। তিনি বলেন, পুলিশের কাজটাই এমন। রোদ-বৃষ্টি প্রাকৃতিক দুর্যোগ সবকিছু মোকাবিলা করেই আমাদেরকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। মানুষ নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে যদি বাড়ি ফিরতে পারে তাহলেই আমাদের দায়িত্ব সার্থক হবে।

এ সময় তিনি আরো বলেন, সবার নিরাপত্তায় জেলা পুলিশ কাজ করছে এবং করবে। ঈদের পরেও ঘাটে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা থাকবে। আর যদি এই গরমের কথা বলি তাহলে আপনারা নিজেই অনুভব করছেন কতটুকু কষ্ট হচ্ছে মানুষের এই তাপদাহে। পুলিশরাও তো মানুষ। কিন্তু আমাদের কিছুই করার নেই। এটাই আমাদের দায়িত্ব। আর আমরা আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য।

এ সম্পর্কিত আরও খবর