গোর-এ শহীদ ময়দানে লাখো মুসল্লির ঈদের নামাজ আদায়

, জাতীয়

আরিফ জাওয়াদ, বার্তা২৪.কম, দিনাজপুর | 2023-09-01 21:03:25

মহামারি করোনার ধকল সামলে দু’ বছর পর উপমহাদেশে সর্ববৃহৎ ঈদগাহে লাখো মুসল্লি যেই মাত্র দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে ঈদের পড়তে যাবে, সেই মুহুর্তে মেঘের চোখ রাঙানি। মেঘ রেগেছে তো কি হয়েছে! মেঘের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে এবার আড়ম্বরের সাথে জেলার বড় ময়দানে লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের আয়োজনে ১০ লাখ মুসল্লির নামাজ আদায়ের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও, ৬ লাখ মুসল্লি এবারের ঈদুল ফিতরের নামায আদায় করেছেন বলে দাবি আয়োজকদের।

মঙ্গলবার (৩ মে) দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতাল জামে মসজিদের খতিব মাওলানা শামসুল হক কাসেমি’র ইমামতিতে ঈদের ওই নামাযটি অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহৎ এ ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বিপিএম, পিপিএম (বার), জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইমাম চৌধুরী প্রমুখ।

দিনাজপুর ছাড়াও বগুড়া, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড় জেলাসহ আশে-পাশের জেলার মুসল্লিরা নামাজ আদায় করতে আসেন। বৃহৎ এই জামাতে নামাজ আদায় করতে পেরে খুশি আশেপাশের ও দুরদুরান্ত থেকে আগত মুসল্লিরা।


মুসল্লিদের ঈদের নামায নির্বিঘ্ন করতে মাঠের ভিতরে বসানো হয়েছিল ১১০ টি মাইক। প্রবেশের জন্য ছিল ১৯টি ফটক, একই সঙ্গে ২৫০ জন মুসল্লি ওযু করতে পারে এমন ব্যবস্থার পাশাপাশি ছিল পানি, টয়লেট ব্যবস্থা।

জঙ্গি হামলাসহ কোনো ধরনের নাশকতা যাতে না হয় সেজন্য সার্বিক নিারপত্তায় ছিল তিন স্তরের ব্যবস্থাপনা। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোড়দারে পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, এনএসআই, ডিজিএফইউ, ডিএসবিসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মোতায়েন ছিল। প্রতিটি কাতারেই ছিল সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা। একই সঙ্গে গোয়েন্দা নজরদারীসহ সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে মনিটরিংও ছিল চোখে পড়ার মত।

মুসলিম উম্মার শান্তি কামনা করে মাওলানা শামসুল হক কাসেমি’র পরিচালনায় বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয় এবছরের ঈদুল ফিতরের নামায।

উল্লেখ্য, দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ বড় ময়দানের আয়তন প্রায় ২২ একর। ২০১৭ সালে নির্মিত ৫২ গম্বুজের ঈদগাহ মিনার তৈরিতে খরচ হয়েছে তিন কোটি ৮০ লাখ টাকা। ঈদগাহ মাঠটি ঐতিহাসিক নিদর্শন ও মনোরম সৌন্দর্য ও নান্দনিক হিসেবে নির্মাণ করা হয়। ৫০ গম্বুজের দুই ধারে ৬০ ফুট করে দুটি মিনার, মাঝের দুটি মিনার ৫০ ফুট করে। ঈদগাহ মাঠের মিনারের প্রথম গম্বুজ অর্থাৎ মেহেরাব (যেখানে ইমাম দাঁড়াবেন) তার উচ্চতা ৪৭ ফুট। এরসঙ্গে রয়েছে আরও ৪৯টি গম্বুজ। এছাড়া ৫১৬ ফুট লম্বায় ৩২টি আর্চ নির্মাণ করা হয়েছে। পুরো মিনার সিরামিকের তৈরি। প্রতিটি গম্বুজ ও মিনারে রয়েছে বৈদ্যুতিক লাইটিং। রাত হলে ঈদগাহ মিনার আলোকিত হয়ে উঠে। ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই মাঠে ঈদের ছয়টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর