ভারত ভ্রমণে ইমিগ্রেশন সারতে ৫ ঘণ্টা!

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল(যশোর) | 2023-08-31 12:00:49

করোনা সংক্রমণ কমে আসায় ভ্রমণে সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বেড়েছে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত। গড়ে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ হাজার যাত্রী যাতায়াত করছে। তবে যাত্রী বৃদ্ধির সাথে সাথে দুই পারে নানান অব্যবস্থাপনায় বেড়েছে যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তি। বর্তমানে বেনাপোল ও পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পূর্ণ করতে এক জন যাত্রীর ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগছে।

জানা যায়, করোনা সংক্রমণ কমে আসায় দুই বছর পর চালু হয়েছে ট্যুরিস্ট ভিসা। মেডিকেল, বিজনেস ও শিক্ষা ভিসায় ভ্রমণে শর্ত শিথিল হয়েছে। এতে জরুরী প্রয়োজনে বেড়েছে যাত্রী যাতায়াত। প্রতিবছর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ২০ লাখ পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করে থাকে। তবে এ যাতায়াতের সাথে সাথে বেড়েছে সীমাহীন ভোগান্তি। ভারত ভ্রমণে ভিসা ফি বাবদ ভারতীয় দূতাবাসকে ৮৪০ টাকা, ৫শো টাকা ভ্রমণ কর ও বন্দর ট্যাক্স বাবদ আরও ৫০ টাকা গুনতে হয় যাত্রীদের। এসব যাত্রীদের কাছ থেকে ভ্রমণ কর বাবদ সরকারের রাজস্ব আসে প্রায় ১০০ কোটি টাকা।

করোনা সংক্রমণ কমে আসায় দুই বছর পর চালু হয়েছে ট্যুরিস্ট ভিসা।

তবে বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরের যাত্রী সেবা নিয়ে রয়েছে নানান অভিযোগ। বন্দরের প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা কম থাকায় যাতায়াতের সংখ্যা বাড়লে রোদ, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে যাত্রীদের দাঁড়াতে হয় সড়কের ওপর। ভারত অংশেও ধীরগতিতে ভোগান্তি আরও বেড়েছে। ভোগান্তি থেকে মুক্তিতে দীর্ঘদিন ধরে বন্দরে যাত্রী ছাওনী ও সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোর জনবল বৃদ্ধির দাবী থাকলেও এ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি।

ভারতগামী কয়েকজন পাসপোর্ট যাত্রীরা বলেন, নানান অব্যবস্থাপনায় ভোগান্তির মধ্যে যাতায়াত করতে হচ্ছে। যাত্রী ছাওনী না থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। বন্দরে দালালরা অতিরিক্ত টাকা নিয়ে লাইন ছাড়া পারাপার করছে। আর যারা টাকা দিচ্ছেনা তাদের লাইন শেষ হচ্ছেনা। ভারত থেকে ফেরার সময় সামান্য কেনা-কাটা থাকলে কাস্টমস সদস্যরা অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের নজরদারী বাড়ানো দরকার।

ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা সব তুলে নেওয়ায় যাত্রী যাতায়াত বেড়েছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি মো. রাজু জানান, ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা সব তুলে নেওয়ায় যাত্রী যাতায়াত বেড়েছে। বুধবার ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ৩৯১৯ জন যাত্রী যাতায়াত করেছে। বর্তমানে করোনা টিকার ডবল ডোজ নেওয়া থাকলে ভারত যাওয়া যাচ্ছে।

ইমিগ্রেশনে যাত্রীদের সেবা বাড়াতে মুক্তিযোদ্ধা ও ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য আলাদা কাউন্টার বাড়ানো হয়েছে। ইমিগ্রেশনের মধ্যে দালালদের ঢোকার কোন সুযোগ নেই। তবে বাইরে যাতে যাত্রীরা দুর্ভোগ বা হয়রানির শিকার না হয় সংশ্লিষ্ট সবাই যদি যার যার অবস্থানে কাঙ্খিত সেবা বাড়ায় তবে যাত্রীদের ভোগান্তি কমবে।

বেনাপোল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) কামাল হোসেন ভুইয়া বলেন, বন্দর এলাকায় যাত্রীদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। দালাল শ্রেণীর কারও কাছে যাতে যাত্রীরা পাসপোর্ট ও অর্থ লেনদেন না করে সতর্ক করা হচ্ছে।

বেনাপোল বন্দরের সহকারী পরিচালক সঞ্জয় বাড়ৈ বলেন, যাত্রী যাতায়াত বাড়ায় দীর্ঘ লাইন হচ্ছে। তবে যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে যাত্রী ছাওনী তৈরিতে জায়গা অধিগ্রহণের কাজ চলমান রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর