ভরা মৌসুমেও কমছে না চালের দাম, আরও বৃদ্ধির শঙ্কা

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 00:45:40

ধানের ভরা মৌসুমেও কমছে চালের দাম। এ বিষয়ে খিলক্ষেত বাজারের পাইকারি চাল বিক্রেতা রাসেল আহমেদ বলেন, এখন বোরো ধানের ভরা মৌসুম, এসময় চালের দাম সাধারণ কমে আসে। কিন্তু এবার তেমনটা দেখা যাচ্ছে না। এতে শঙ্কা তৈরি হয়েছে যে সামনে হয়তো চালের দাম আরও বাড়বে।

চালের দাম বাড়ায় আয় ব্যয়ের হিসাব মেলাতে পারছেন না নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা বলছেন, বোরো ধান উঠার এই সময়টায় বাজারে সব চালের দামই কমে আসে। কিন্তু এবার তেমনটা দেখা যাচ্ছে না। দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য এমনিতেই ঊর্ধ্বমুখী। এর মধ্যে যদি দেশে অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদিত ধান থেকে তৈরি চালের দামও না বাড়তে থাকে তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়।

চলমান করোনা মহামারি মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ভোজ্যতেলসহ অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এমন পরিস্থিতিতে যদি সরকার দেশে উৎপাদিত ধান-চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এখনই সতর্ক না হয়। তাহলে সামনে বিপদ আসন্ন বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

কারওয়ানবাজারে ইভা রাইস এজেন্সির শহিদুল ইসলাম বলেন, বোরো মৌসুমে সাধারণত চালের দাম কমে থাকে। মিনিকেট ৫০ কেজির বস্তা ২৭০০ থেকে ২৮০০ টাকার মধ্যে নামে। কিন্তু এবার মিনিকেটের দাম কমেনি। আপাত দৃষ্টিতে দাম স্থিতিশীল দেখা গেলেও নতুন মৌসুম বিবেচনায় দাম কেজিতে ৩/৪ টাকা বেড়েছে।

কারওয়ান বাজারের আরেক বিক্রেতা বাচ্চু মিয়া জানান, চলতি মে মাসের শুরুতে যখন নতুন মিনিকেট চাল বাজারে আসে, তখন দাম ছিল প্রতি কেজি ৫৭ টাকা। এই ১৫ দিনের মধ্যেই দাম উঠে গেছে ৬০ টাকায়। বিআর আটাশ চাল কয়েক দিনের জন্য প্রতি কেজি পাইকারিতে ৪২ টাকায় নেমেছিল। এখন আবার সেটা ৪৭ টাকায় উঠেছে। খুচরায় ৫০ টাকা থেকে ৫২ টাকা।

কারওয়ান বাজারে কুষ্টিয়ার রশিদ মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে বস্তা ২৯৫০ টাকায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মোজাম্মেল ও মনজুর ব্র্যান্ডের চাল বিক্রি হচ্ছে ৩১৫০ টাকায়। মাঝারি চাল (বিআর আটাশ) বস্তা ২২০০ থেকে ২২৫০ টাকায়, আমন মৌসুমের পাইজাম ২১০০ টাকা থেকে ২১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাঠ থেকে প্রায় ৮০ ভাগ ধান ঘরে উঠেছে কৃষকের। এসব ধান বিক্রির জন্য হাটে তুলছেন তারা। কৃষকদের অভিযোগ, চালের দাম বাড়লেও সে তুলনায় বাড়েনি ধানের দর। তারা জানান, বর্তমান বাজারে চালের দাম বেশি ধানের দাম কম।

রাজধানীর খুচরা দোকানে চালের দাম আরও বেশি। খিলক্ষেত উত্তরপাড়ার একটি মুদি দোকানে মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৬৮ টাকায়, বিআর আটাশ চাল প্রতি কেজি ৫২ টাকায় এবং পাইজাম ৪৮ টাকা থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ বিষয়ে মুদি দোকানি করিমুল হক বলেন, এই মৌসুমে সাধারণত সরু চালের দাম কমে আসে। প্রতি বছরই দাম কমে থাকে। এখন যেই দাম তাতে সামনে আরও বাড়ার আশঙ্কা আছে।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে সরু চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা থেকে ৬৮ টাকায়। এক বছর আগেও এই চালের দাম ছিল ৫৮ টাকা থেকে ৬৫ টাকা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর