কুষ্টিয়ায় কালবৈশাখীর তাণ্ডব

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া | 2023-08-31 08:29:16

কুষ্টিয়ায় কালবৈশাখী ঝড়ে অনেক গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও বৃষ্টির সঙ্গে ভারী বজ্রপাতও হয়েছে। উপড়ে পড়েছে হাজার হাজার গাছ। ভেঙে পড়েছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা।

শনিবার (২১ মে) সকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঝড় শুরু হয়। প্রায় ১৫ মিনিট স্থায়ী ছিল এ ঝড়।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ঝড়ের তাণ্ডবে শত শত গাছপালা ভেঙে রাস্তায় পড়ে আছে। শত শত হেক্টর জমির আম, কাঁঠাল, লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের ফারাজী পাড়ায় শতবর্ষী বটগাছ উপড়ে পড়েছে। এছাড়াও অনেক ঘরবাড়ি ও গাছপালা উপড়ে গেছে।

দৌলতপুর উপজেলার আম বাগানের মালিক কামাল উদ্দিন বলেন, বাগানের সব আম ঝড়ে পড়ে গেছে। আর এক সপ্তাহ পর থেকে আম পাড়া শুরু হতো। কিন্তু ঝড়ের তাণ্ডবে আমার ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল।

মিরপুর উপজেলার মশান গ্রামের কৃষক কিরামত আলী বলেন, ফসলের খেতে বেশ ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের পর দেখা গেছে, জমিতে জমে থাকা পানির ওপর লুটিয়ে পড়েছে ধান। পেঁপে বাগানের খুব ক্ষতি হয়েছে। বেশির ভাগ পেঁপে গাছ উপড়ে গেছে। আমার প্রায় হাজার হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।

আম ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম বলেন, আমি প্রতি বছর বাগান ধরে আম কিনি। এ বছরও কিনেছি। ঝড়ে সব আম পড়ে গেছে। এখন লাভ তো দূরের কথা, আসল টাকাও উঠবে না।

কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়কের মিরপুর উপজেলার বিভিন্ন সড়কে বড়বড় গাছ পড়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান কামারুল আরেফীন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহায়তায় উদ্ধার কাজ তৎপরতা চালায়।

কুষ্টিয়া ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক জানে আলম বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে সড়কের দুপাশে শত শত গাছের ডালপালা ভেঙে পড়েছে। কিছু কিছু জায়গায় এলাকাবাসীর সহায়তায় আবার কোথাও কোথাও ফায়ার সার্ভিসের টিম গাছগুলো সড়ক থেকে সরিয়ে নিচ্ছে।

মিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামারুল আরেফীন বলেন, এমন ক্ষয়ক্ষতি হওয়া কালবৈশাখী ঝড় খুব কম দেখেছি। এর আগে একটা এলাকা বা কয়েকটা এলাকাকে কেন্দ্র করে হতো। এবারে পুরো জেলাজুড়ে মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (টেকনিক্যাল) মো. মোকসেমুল হাকিম বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে পুরো জেলা লন্ডভন্ড। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে এবং গাছের ডাল পড়ে তার ছিঁড়ে অনেক স্থানের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে আছে।

কুমারখালী আবহাওয়া অফিসের অফিসার ইনচার্জ মামুন আর রশিদ বলেন, শনিবার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে ৭ কেটিএফ ঝড় ও ২৫ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। তবে কুমারখালী উপজেলায় ঝড়ের মাত্রা অন্যান্য উপজেলার চেয়ে তুলনামূলক কম হয়েছে।

কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক সুশান্ত কুমার প্রমানিক বলেন, ঝড়ে আম, লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাৎক্ষণিক ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা যায়নি। তবে কৃষি বিভাগের লোকজন মাঠে গিয়ে ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়ে কাজ করছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর