ধান কাটা শ্রমিকের মজুরি ১২’শ টাকা

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল | 2023-08-28 14:35:36

ঘূর্ণিঝড়-রোদ ও বৃষ্টির মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে টাঙ্গাইলে কৃষকের স্বপ্নের সোনালী ফসল বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। জেলার ১২ উপজেলায় নিম্নাঞ্চল টানা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে পাকা ধান। আবার কয়েকটি উপজেলায় পাকা বোরো ধান পানিতে ডুবে পচেও গেছে। হাজার টাকা দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে চরম বিপাকে পড়েছেন ধান চাষিরা।

এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শ্রমিক সংকট হলেও উত্তরবঙ্গের ধান কাটা শ্রমিকরা দিন মজুর হিসেবে ধান কাটতে ভিড় করছেন জেলার সখীপুর, বাসাইল, মির্জাপুর, কালিহাতী ও দেলদুয়ার উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায়। এসব এলাকায় দলবদ্ধ হয়ে শ্রমিকরা ধান চাষিদের বাড়িতে চুক্তিতে ধান কাটতে যাচ্ছে।

রোববার (২২ মে) বিকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে শ্রমিক কেনা-বেচার দৃশ্য দেখা যায়। তিন থেকে ১২ জন করে গ্রুপ হয়ে ধান কাটতে আসেন তারা। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শ্রমিক কেনা-বেচা হয়। এ হাটে শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য সর্বদা নজর রাখছেন স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা।

নাটোর থেকে আসা ধান কাটা শ্রমিক রহিজ মিয়া, রতন আলী ও করিম মন্ডল বলেন, কয়েকদিন আগে নিজের এলাকায় ধান কাটা শেষ হয়েছে। বাড়িতে বসে থেকে কী করব। জানতে পারলাম টাঙ্গাইলে ধানকাটা শ্রমিকের প্রতিদিন মজুরি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। তাই এলাকার ৫ জনের একটি গ্রুপ এলেঙ্গায় শ্রমিক হাটে উঠেছি।

রংপুর থেকে আসা ধান কাটা শ্রমিক রমিজ আলী, রেজাউল করিম, হাফিজুর রহমান ও জয়নাল মন্ডল বলেন, রোববার দুপুর ২টায় এলেঙ্গায় আসছি। স্থানীয় অনেক গেরোস্থরা দাম-দর করছেন। তারমধ্যে কেউ কেউ ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা দিন মজুরি হিসেবে বলছেন। পরে ১১০০ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে কাজে যাচ্ছি।

ধান কাটা শ্রমিক নিতে আসা ভূঞাপুর উপজেলার নিকরাইলের আমিনুল ইসলাম বলেন, যমুনা নদীতে বন্যার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে পানি এলাকায় আসতে শুরু করেছে। যেকোনো সময় পানি এসে তলিয়ে যেতে পারে আমার ৫ বিঘা জমি। এলাকায় ধান কাটা শ্রমিক সংকট। এলেঙ্গায় ধান কাটা শ্রমিক কেনা-বেচা হয় শুনে এখানে আসছি। ১১৫০ টাকা করে ৬ জন শ্রমিক নিয়েছি। সঙ্গে ৩ বেলা খাবার দিতে হবে।

এলেঙ্গা থেকে শ্রমিক নিতে আসা সরাতৈল গ্রামের হাসান আলী বলেন, ইতোমধ্যে বৃষ্টির পানিতে পাকা ধান শুয়ে পড়েছে। ধানের গোড়া পচন শুরু হয়েছে। লোক পাওয়া যায় না। এলাকাতে যারা ধান কাটার কাজ করেন তারাও নিজেদের ধান কাটতে ব্যস্ত। আবার কেউ কেউ পানির কথা শুনে কাজ করতেও চান না। এ জন্য এলেঙ্গায় এসেছি উত্তরবঙ্গ থেকে আসা ধান কাটা শ্রমিক নিতে।

উত্তরবঙ্গ থেকে আসা ধান কাটা শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত এলেঙ্গায় শ্রমিকের হাট গড়ে উঠেছে। এরমধ্যে কোনো শ্রমিকদের নিরাপত্তার অবনতির ঘটনা ঘটেনি। তারপরেও আমরা সজাগ আছি, যাতে তাদের নিরাপত্তাজনিত কোনো সমস্যা না হয়। তারপরও যদি কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তাহলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ সম্পর্কিত আরও খবর