নোয়াখালীতে হাতুড়ে ডাক্তারের শিশু হত্যার অভিযোগে মামলা

, জাতীয়

সেন্ট্রাল ডেস্ক ২ | 2023-08-10 19:03:15

হাতুড়ে ডাক্তারের চিকিৎসায় নোয়াখালী সদর উপজেলায় গর্ভজাত দুই শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার নোয়াখালী ও এওজবালিয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে থানায় শিশু হত্যার মামলা করেছেন প্রসূতি মা। নোয়াখালী ইউনিয়নের ধুমচর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত মা আছিয়া বলেন, প্রসব ব্যথ্যা শুরু হলে বাড়িতে কেউ না থাকায় আমি হাসপাতালে না গিয়ে বাড়ির চৌধুরীর হাট বাজারের ডা. মোজাম্মেলের কাছে যাই। তিনি প্যারাসিটামল ও কিছু ক্যাপসুল দেন। খাওয়ার পরে আমার এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি জানান, বাচ্চা প্রসব করাতে তাকে দেওয়া স্যালাইনের সঙ্গে একটি ইনজেকশন দিলে তিনি একটি মৃত শিশু প্রসব করেন। চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় গর্ভজাত সন্তানের মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ এনে সুধারাম মডেল থানায় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন আছিয়া। এদিকে ডা. মোজাম্মেলের বাড়িতে গিয়ে দেখা তিনি ঘরে তালা লাগিয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। এলাকার বৃদ্ধ আবু তাহের (৮০) জানান, ডা. মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে এ ধরনের অনেক অভিযোগ রয়েছে। থানা পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় না। এওজবালিয়া ইউনিয়নের ভুঁইয়া দিঘির পাড় গ্রামের প্রসূতি আয়েশার স্বামী সুনাম জানান, হাতুড়ে ডাক্তার মোয়াজ্জেমের দেওয়া ওষুধ খেয়েই তার স্ত্রীর সমস্যা দেখা দেয়। মোয়জ্জেমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নোয়াখালী সিভিল সার্জন ও জেলা পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করেছেন সুনাম। তিনি জানান, তার অনুপস্থিতিতে জ¦রে আক্রান্ত গর্ভবতী আয়েশা গত শনিবার মোয়াজ্জেমের কাছে গেলে তিনি এন্টিবায়োটিক ও প্যারাসিট্যামল খেতে দেন। খাওয়ার পরেই সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। দ্রুত তাকে চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তার গর্ভজাত সন্তান মারা গেছে বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মোয়াজ্জেম। এভাবে একের পর এক হাতুড়ে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার শিকার হচ্ছেন গর্ভবর্তী মায়েরা, প্রসবের আগেই মৃত্যু হচ্ছে তাদের কাক্সিক্ষত সন্তানের। নোয়াখালীর ৭০টি ইউনিয়নে ৪ শতাধিক হাতুড়ে ডাক্তার রয়েছে। ফুটপাত বা ফার্মোসিতে বসা এসব ‘ডাক্তার’ রোগী দেখে কোনো পরীক্ষা ছাড়াই অনুমানে বলে দেন রোগের নাম। জটিল ও সাধারণ সব রোগের চিকিৎসা করেন তারা। তাদের ভিজিটিং কার্ডে বিভিন্ন ডিগ্রিসহ লেখা থাকে কেউ অভিজ্ঞ, কেউ বিশেষজ্ঞ। অথচ তাদের কারো পেশাচর্চার অনুমোদন নেই। এরপরও তারা প্রশাসনের নাকের ডগায় চলিয়ে যাচ্ছেন অপচিকিৎসা। এ ব্যাপারে নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. বিধান সেন গুপ্ত জানান, অভিযোগ পাওয়ার ওই দুই হাতুড়ে ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তররে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। নোয়াখালী সদর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, হাতুড়ে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর