সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে উৎকণ্ঠা আর লালিত স্বপ্নের অবসানের। দীর্ঘদিন অপেক্ষা করার পর এখন যেন আর মোটেও সময় কাটছে না। স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন হতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। কিন্তু এই কয়েক ঘণ্টা সময় যেন এক যুগের মতো। অধীর অপেক্ষায় কোটি মানুষ। কখন উদ্বোধন হবে ১৭ কোটি মানুষের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু।
পদ্মা সেতু বাঙালির ইতিহাসে একটি মাইলফলক। অর্থনৈতিক মুক্তির পাশাপাশি এই সেতু বাঙালির জীবনের একটি বড় অর্জন। এই সেতুর সাথে মিশে আছে ১৭ কোটি বাঙালির সুখ-দুঃখ আর আর্থ-সামাজিক মুক্তির সোপান। ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম সেই স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বাঙালির কাছে পদ্মা সেতু তেমনই একটি অর্জন। দীর্ঘদিন সেতুর জন্য অপেক্ষায় থাকলেও এখন আর বাঙালির অপেক্ষার প্রহর কাটছে না।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও নিজেদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা দেখানোর মতে দুঃসাধ্য কারো ছিল না। নিজস্ব অর্থায়নে এতো বড় বাজেটের প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বিশ্বকে অর্থনৈতিক সক্ষমতার দেখানোর সেই দুঃসাধ্যের পদ্মা সেতু এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। উদ্বোধনকে ঘিরে এখন সাজসাজ রব পদ্মা পাড়ে। এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সরকার ও সেতু কর্তৃপক্ষ।
পদ্মা সেতু এখন আর বাঙালির কাছে স্বপ্ন নয়। পদ্মা সেতু এখন বাঙালির কাছে এক গৌরবোজ্জ্বল সোনালী অহংকার। এই পদ্মা সেতুই আবার বিশ্বকে জানান দিল বাঙালিকে দাবিয়ে রাখা সম্ভব নয়। খরস্রোতা পদ্মার বুকে মাথা উচুঁ করে এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে স্বপ্নের সেতুটি। সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে পদ্মা বহুমুখী সেতু নিমার্ণ প্রকল্পটি শেখ হাসিনা সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প। এ প্রকল্পের সাথে মিশে ছিল বাঙালির অস্বিত্ব, টিকে থাকার সংগ্রাম।
২৫ জুন অপেক্ষার প্রহরের ইতি টানবে পদ্মা সেতু। উদ্বোধনের পরের দিন যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে সেতু। প্রবাহমান পদ্মার বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা বাঙালির অহংকার পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে ছুঁটে চলবে যানবাহন। প্রসারিত হবে দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির দ্বার। খুলে যাবে বৈদেশিক অর্থনীতির মুক্ত বাজার। বাড়বে দেশের প্রবৃদ্ধি।