দুলাভাইয়ের চাইয়ে শ্যালক ধরবে রুই-বোয়াল

, জাতীয়

রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) | 2023-09-01 13:26:36

ভাটি অঞ্চলের বাসিন্দা মো. ইসহাক মিয়া (৩৫)। মাছ ধরার জন্য তিনি নদী-হাওড়ে চাই (মাছ ধরার ফাঁদ) ফেলতেন। কিন্তু চাইয়ের আকার ছোট হওয়ায় বড় মাছ ধরা পড়তো না। তাই সে উজান অঞ্চলে থাকা দুলাভাই শহীদ মিয়ার (৫০) কাছে বড় একটা চাই বুনে দেওয়ার আবদার করে। শ্যালকের আবদার রক্ষা করতে তিন দিন পরিশ্রম করে প্রায় ছয় ফুট উচ্চতার এক চাই বুনেন শহীদ।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) বিকালে দুলাভাইয়ের বাড়ি থেকে সেই চাই ট্রেনে করে নিয়ে যাওয়ার সময় গৌরীপুর জংশনে। এসময় ক্যামেরায় ধরা পড়ে ইসহাক।

ইসহাক মিয়ার বাড়ি ময়মনসিংহের নেত্রকোনার বারহাট্টার গেরিয়া বাজার। পেশায় গরু ব্যবসায়ী হলেও তার মাছ ধরার নেশা রয়েছে।

শহীদ মিয়ার বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ধরুয়া গ্রামে। সে পেশায় একজন কৃষক হলেও ভালো চাই বুনতে পারেন।

নেত্রকোনার বারহাট্টা থানার গেরিয়া বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কংস নদ। বর্ষায় স্রোতস্বিনী হয়ে কংস পানিতে দুকুল ছাপিয়ে নেয়। পানিতে ভেসে বারহাট্টার হাওড়-বিল। যখন পানি কমতে শুরু করে তখন চাই পেতে ও জাল দিয়ে মাছ ধরার উৎসব শুরু হয়। সেই উৎসবে গা ভাসিয়ে ইসহাক মেতে উঠতেন মাছ শিকারে। কিন্তু বড় চাইয়ের অভাবে সে বড় বড় মাছ ধরতে পারতো না। তাই সে দুলাভাই শহীদের কাছে এক সপ্তাহ আগে একটি বড় চাই তৈরি করে দেওয়ার আবদার করে।

শহীদ মিয়া বলেন, ইসহাকের আবদার রক্ষা করতে তিন দিন পরিশ্রম করে চাইটি বুনেছি। চাই বুননে ব্যবহার করা হয়েছে মোড়ল বাঁশ থেকে তৈরি বেত ও নায়লনের সুতা। প্রায় ছয় ফুট উচ্চতার এই চাইটি দিয়ে বড় বড় মাছ ধরা যাবে।

মঙ্গলবার দুপুরে ধরুয়া গ্রাম থেকে ভ্যান গাড়িতে করে চাইটি গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনে নিয়ে আসেন ইসহাক। এরপর মহুয়া কমিউটার ট্রেনে মালবাহী বগিতে তুলে চাইটি নিয়ে যান বারহাট্টায়। চাই নিয়ে ইসহাক যখন প্লাটফরমে বসে ট্রেনের অপেক্ষা করছিলেন তখন অনেকে ভীড় জমায় চাইটি দেখতে। কেউ মেতে উঠে সেলফি ও ছবি তুলতে।

ইসহাক মিয়া বলেন, বড় মাছ ধরতে বড় চাইয়ের দরকার হয়। আমাদের এখানের হাঁট-বাজারে বড় চাই পাওয়া যায় না। তাই দুলাভাইকে বড় চাই তৈরি করে দেওয়ার কথা বলি। বড় চাই নদী-হাওরে পেতে রুই-বোয়ালসহ অন্যান্য বড় মাছ ধরা যাবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর