শহরে কম গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট বেশি

, জাতীয়

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, রাজীবপুর (কুড়িগ্রাম) | 2023-09-01 10:43:52

বিশ্বব্যাপী জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি এবং সরকার সাশ্রয়ী নীতি গ্রহণ করার কারণে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে উচ্চমূল্যে এলএনজি আমদানি সাময়িক বন্ধ রয়েছে। এতে কমেছে গ্যাস সরবরাহ ও বিদ্যুতের উৎপাদন।

জেলা শহরগুলোতে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বাড়লেও মফস্বল শহরগুলোতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে জনসাধারণকে ধৈর্যশীল হয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার অনুরোধ করেছে সরকার।

কুড়িগ্রামের রাজীবপুর ও রৌমারী উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় পার্শ্ববর্তী জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে। গত ২ সপ্তাহ থেকে তীব্র লোডশেডিং হচ্ছে এই দুই উপজেলায়। উপজেলা দু'টিতে গড়ে দৈনিক বিদ্যুৎ মিলছে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা। সেটিও নিরবিচ্ছিন্ন নয়।

অব্যাহত ভাবে লোডশেডিং বৃদ্ধি পাওয়ায় আষাঢ়ের ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। ব্যাহত হচ্ছে বিভিন্ন সেবামূলক কর্মকাণ্ড শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা এবং বিদ্যুৎ নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর।

সবুজবাগ গ্রামের গোলজার হোসেন বলেন, বাড়িতে বৃদ্ধ মা বাবা এবং ছোট শিশু বাচ্চা রয়েছে দিন রাতে বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকে না খুবই কষ্ট হচ্ছে।

বালিয়ামারী গ্রামের গৃহিনী আসমা খাতুন বলেন, আমার ১০ মাস বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। রাতে বিদ্যুৎ না থাকলে গরমে ঘুমাতে পারে না বার বার ঘুম ভেঙে যায়। প্রায় সারারাত পাখা দিয়ে বাতাস করতে হয়।

রাজীবপুর উপজেলা শহরের হৃদয় টেইলার্সের মালিক মজিবর রহমান বলেন, বিদ্যুতের অভাবে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। দিনে বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। ঈদে কিছু কাপড়ের অর্ডার পেয়েছি এখন মনে হচ্ছে সঠিক সময় গ্রাহককে সরবরাহ করতে পারবো না।

উপজেলা চত্বরে চা ব্যবসায়ী আবু সাঈদ বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় তার দোকানের বিক্রি কমেছে। তিনি আরও বলেন, আগে থেকেই এই এলাকায় লোডশেডিং বেশি এখন আরও বাড়ছে।

হাইস্কুল গেটের ব্যবসায়ী ফারুক আহমেদ বলেন, গরমে আইসক্রিমের চাহিদা বেশি থাকে বিদ্যুৎ না থাকায় তার বিক্রি কমে গেছে। বেশকিছু আইসক্রিম নষ্ট হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগে গ্যাসের সংকট সৃষ্টি হলে তেল বা কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বাড়ানো হতো। এবার তা হতে করা হচ্ছে না। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রাজীবপুর উপজেলার স্থানীয় পরিচালক খলিলুর রহমান বলেন, আগের চেয়ে লোডশেডিং বৃদ্ধি পেয়ে জনজীবন ভোগান্তি বেড়েছে। এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে কিছুটা সময় লাগবে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রৌমারী জোনাল অফিসের কর্মকর্তা শামিম খান বলেন, জাতীয় গ্রিড থেকেই বিদ্যুৎতের সরবরাহ কম পাচ্ছি আমরা তাই লোডশেডিং বেড়েছে। আমাদের চাহিদা ১২০ মেগাওয়াট, আগে পেতাম ৬০ থেকে ৭০ মেগাওয়াট। এখন সরবারহ আরও কমেছে তাই লোডশেডিংয়ের মাত্রাও বেড়েছে।

এদিকে কয়লাভিত্তিক তিন বিদ্যুৎকেন্দ্র—পায়রার দ্বিতীয় ইউনিট, রামপাল ও ভারতের গোড্ডা থেকে আমদানিকৃত বিদ্যুৎ এ বছরের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এতে করে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানান তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর