মমেক হাসপাতাল থেকে ছোটমনি নিবাসে সেই নবজাতক

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ | 2023-08-24 08:57:10

ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাক চাপায় মায়ের পেট ফেটে সড়কে জন্ম নেওয়া সেই নবজাতককে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (মমেক) থেকে আজিমপুর ছোটমনি নিবাসে পাঠানো হয়েছে। শিশুটিকে লালন পালনে পরিবারের সামর্থ্য না থাকায় জন্মের ১৪ দিন পর চিকিৎসা শেষে শুক্রবার (২৯ জুলাই) ১২টার দিকে শিশুটিকে সমাজসেবা অধিদফতরের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করেন চিকিৎসকরা।

এ সময় হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. ওয়ায়েজউদ্দীন ফরাজি, জেলা সমাজসেবার উপ-পরিচালক আবু ওবায়দুল ওয়ালী উল্লাহ, ফাতেমার দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. ওয়ায়েজউদ্দীন ফরাজী জানান, ফাতেমা সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ায় তাকে ছুটি দিয়ে সমাজসেবা অধিদফতরের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তাস্তর করা হয়েছে।

জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবু ওবায়দুল ওয়ালী উল্লাহ জানান, জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক এবং পরিবারের সম্মতি নিয়ে ফাতেমাকে সমাজসেবা পরিচালিত ঢাকার আজিমপুরের ছোটমণি শিশু নিবাসে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তাকে যত্নে লালন-পালন করা হবে। শিশুটি ছোটমণি শিশু নিবাসে ৬ বছর পর্যন্ত থাকতে পারবে। তার আগেই দাদা-দাদি লালন-পালনে সক্ষমতা হলে তাদের কাছে ফেরত দেওয়া হবে।

ফাতেমাকে বিদায় দেওয়ার সময় দাদা মোস্তাফিজুর রহমান কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, ‘ফাতেমার জন্য সরকার উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিদায় দিতে কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু তার ভালো হবে চিন্তা করে সম্মতি দিয়েছি। আমার পরিবারের তিন জন ট্রাকের চাপায় মারা গেছে। এই ফাতেমা হচ্ছে আমার ছেলে জাহাঙ্গীর ও পুত্রবধূ রত্নার স্মৃতিচিহ্ন। সে মানুষের মতো মানুষ হবে এটাই আমার চাওয়া।’

গত ১৬ জুলাই আলট্রাসোনগ্রাম করতে এসে ট্রাকের চাকায় পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারান ত্রিশাল উপজেলার রাইমনি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৪০), তার অস্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রত্না আক্তার (৩০), মেয়ে সানজিদা আক্তারকে (৬)। এসময় ট্রাক চাপায় রত্নার পেট ফেটে কন্যাশিশুর জন্ম হয়। পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে বাংলাদেশ কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে শহরের লাবীব হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুটির শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় ১৮ জুলাই রাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এনআইসিউ বিভাগে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে শিশুটির চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের মেডিকেল টিম গঠন করা হয়। শিশুটির জন্ডিস, শ্বাসকষ্ট এবং রক্তস্বল্পতা ভালো হওয়ায় ছুটি দেয় চিকিৎসকরা। তবে ডান হাত এবং পায়ের ভাঙা ভালো হতে আরো দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। শিশুটির পরিচর্যা করতে পেরে আল্পুত চিকিৎসকরা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর