'ওঠা-নামা ভাড়া ১০ টাকা!'

, জাতীয়

সীরাত মঞ্জুর, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চট্টগ্রাম | 2023-08-31 18:29:18

 

শনিবার দুপুর দুইটা। নগরের ব্যস্ততম এলাকা বহদ্দারহাট মোড়। সেখানে দাঁড়িয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন শতশত মানুষ। কেউ চাকরি শেষে বাসায় ফিরবেন, কেউবা প্রয়োজনীয় কাজে ভিন্ন ভিন্ন গন্তব্যে যাবেন।

এর মধ্যে একের পর এক আসছে গ্যাস চালিত মিনিবাস ও টেম্পু। গাড়ি আসতেই হুমড়ি খেয়ে শত শত মানুষের উঠার প্রতিযোগিতা। এদিকে গাড়িগুলোর হেলপাররা চিৎকার করে বলছে- 'ওঠা-নামা ভাড়া ১০ টাকা।' অর্থাৎ প্রতিদিন যেখানে নির্ধারিত ভাড়া ৫, ৭ বা ৮ টাকা নেওয়া হতো আজ সেই ভাড়া নিচ্ছে ১০ টাকা। যাত্রীরাও বাধ্য দিচ্ছেন সে বাড়তি ভাড়া।

শনিবার (৬ আগন্ট) দুপুর থেকে নগরের মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, দুই নাম্বার গেট ও অক্সিজেন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র, এসব এলাকার কোথাও ডিজেল চালিত বাস চলতে দেখা যায়নি। তবে দ্বিগুণ ভাড়া নিয়ে চলছে গ্যাস চালিত বাস ও টেম্পু। ফলে চরম দু্র্ভোগে পড়েছেন প্রয়োজনে বাহিরে আসা বিভিন্ন শ্রেণীরপেশার মানুষ।

কালুরঘাট সিএন্ডবি এলাকায় গাড়ির জন্য অপেক্ষায় থাকা ওয়েল গ্রুপের কর্মচারী অঞ্জন বার্তা২৪'কে বলেন, 'আমি জিইসি যাবো। অনেকক্ষণ ২ নাম্বার বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। কিন্তু যেগুলো আসছে সব যাচ্ছে বহদ্দারহাট পর্যন্ত। তাও আবার ৫ টাকার ভাড়া নিচ্ছে ১০ টা করে। কি একটা অবস্থায় পড়লাম। গ্যাসের তো দাম বাড়েনি। তাহলে গ্যাস চালিত এই গাড়ি গুলোর ভাড়া কেন বাড়বে!'

স্কুল শিক্ষার্থী মো. হাসান মুরাদ। বহদ্দারহাটে মোড়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন টেস্পুর জন্য। তার কোচিং নগরের চকবাজারে। কিন্তু যেই টেস্পু ৫ টাকার ভাড়া নিচ্ছেন ১০ টাকা। বাধ্য হয়ে হাসানকেও বাড়তি বাড়া দিয়ে চকবাজার গেছেন।

একই স্থানে শাহ আমানত (কর্ণফুলী) সেতু এলাকা থেকে আসা গ্যাস চালিত ৪ নম্বর রোড়ের একটি মিনিবাস দাড়ায়। হেলপার যাত্রী ডাকছে- 'ওঠা-নামা ভাড়া দশ। মুরাদপুর, দুই নাম্বার গেট, জিইজি, টাইগার পাস।'

এসময় ওই হেলপারের কাছে ভাড়া বেশি কেন জানতে চাইলে বলেন, 'কি করবো ভাই! রিস্ক নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছি।  আমাদের ২-৩টি গাড়ির গ্লাস ভেঙে দিয়েছে তেল চালিত বাস শ্রমিকরা।' গ্যাসের দাম তো বাড়িনে বেড়েছে তেলের দাম। তাহলে আপনারা বেশি ভাড়া কেন নিচ্ছেন, এমন প্রশ্নে কোন উত্তর দিতে পারেনি ওই চালক সহকারী।

এর আগে, গতকাল (শুক্রবার) রাতে হঠাৎ বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে লিটার প্রতি ডিজেল কেরোসিনে ৩৪ টাকা, অকেটেন ৪৬ টাকা ও পেট্রোলের দাম ৪৪ টাকা হারে বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়। এ সিদ্ধান্ত শুক্রবার রাত ১২ থেকেই কার্যকর করা হয়। এই ঘোষণার পর দেশের তেল পাম্প গুলোতে হঠাৎ জড়ো হয় শতশত তেল চালিত মোরটসাইকেল ও বাস। তবে অনেক পাম্প আগে থেকে বন্ধ দেয় মালিক। ফলে এই নিয়ে নেট দুনিয়া জুড়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।

এদিকে চট্টগ্রামে শনিবার সকাল থেকে তেমন চোখে পড়েনি তেল চালিত বাসে চলাচল। প্রতিটি মোড়ে মোড়ে পরিবহণ সংকট দেয়া হয়। ফলে সাধারণ মানুষ পড়ে চরম ভোগান্তিতে। অনেককে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে বিকল্প পরিবহণে যেতে হয় গন্তব্যে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর