অন্ধ হাফেজের ব্রেইল মেশিন মেরামতের জন্য সাহায্যের আবেদন

, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 11:00:57

 

মাত্র চার বছর বয়সের শিশু চান সদাগর। বাবা-মার কোলে হেসে খেলে আর দুরন্তপনা করে সময় কাটতো তার। অভাবী বাবা-মার বুকে কতো আশা-ছেলে বড় হবে একদিন সংসারের হাল ধরবে।

কিন্তু মানুষ যা ভাবে সব সময়তো তা হয় না। মাত্র চার বছর বয়সে পৃথিবীর কী রঙ-রূপই বা দেখেছে সে। এমন সময় ভয়ানক গুটি বসন্তে তার দুটো চোখই নষ্ট হয়ে যায়। সুস্থ স্বাভাবিক চান সদাগর হয়ে যায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধি। পৃথিবীর রঙ-রূপ বলার মতো তেমন স্মৃতিও আজ মনে নেই তার।

জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ৪ নং হাতিভাঙ্গা ইউনিয়নের আমখাওয়া গ্রামের চান সদাগরের দুঃখের কাহিনী এখানেই শেষ হতে পারতো। কিন্তু কে জানতো তার জন্য আরও কী ভয়ানক পরিণতি অপেক্ষা করছে।

শিশু বয়সে স্বাধীনতা যুদ্ধে তার পিতাকে গুলি করে মারে পাকিস্তানী বাহিনী। এর তিন বছর পর ৭৪ সালে মাকেও হারান। জীবন যুদ্ধে একা হয়ে পড়েন দৃষ্টি প্রতিবন্ধি চান সদাগর।

দেওয়ানগঞ্জের এক লঙ্গরখানায় দিনে দু’বেলা খাবার জুটতো চানের। মনিকা নামক এক ইংরেজ মহিলা চালাতেন এ লঙ্গরখানা। একসময় এ মনিকায় তাকে দেওয়ানগঞ্জ থেকে ঢাকা এনে আসাদগেটের কাছে এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধি স্কুলে ভর্তি করে দেন। এখানে তিনি ব্রেইল পদ্ধতিতে হাতের স্পর্শে পড়াশোনা শুরু করেন।

চান সদাগর বার্তা২৪.কমকে জানান, পোষাকসহ তার যাবতীয় খরচ বহন করতেন এ নারী। সেখানে তিনি দশম শ্রেণিতে লেখাপড়া করার সময় এ নারী দেশে ফিরে যান। তার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তিনি ঢাকার তেজগাঁওয়ের রহমতিয়া আলম ইসলামী মিশনে ভর্তি হন। সেখানে ফ্রি বোর্ডিংয়ে থেকে পবিত্র কুরআন শরিফ মুখস্ত করেন। এ সময় আমেরিকার তৈরী একটি ব্রেইল মেশিন কিনেন তিনি।

চান সদাগর জানান, এ মেশিন দিয়ে তিনি কুরআন শরিফ ছেপে দৃষ্টি প্রতিবন্ধিদের কুরআন শিক্ষা দিয়ে থাকেন।  তার তিনি সদস্যের পরিবারের খরচ যোগান দিত এ মেশিন। দীর্ঘদিন যাবত মেশিনটি নষ্ট থাকায় তার রুটি রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে যায়। একরকম অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে তাদের।

তিনি আরও জানান, মাত্র ২০/২২ হাজার টাকা হলেই মেশিনটি ভাল করা সম্ভব হবে। আর এতেই তার পরিবারের দু’মুঠো ভাতের সংস্থান হবে।  সমাজের সহৃদয় ব্যক্তির কাছে অর্থ সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

সহায়তা পাঠানোর ঠিকানা- ০১৭৬১৫৮৬৭৯১।

এ সম্পর্কিত আরও খবর