যাত্রী ছাউনীতে থাকা সেই শিক্ষকের দায়িত্ব নিলেন ইউএনও

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বগুড়া | 2023-08-31 13:17:20

গত দেড় বছর ধরে যাত্রীছাউনীতে থাকা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও এক সময়ের দাপুটে রাজনীতিবীদ আব্দুর রশিদ মাস্টারের দায়িত্ব নিয়েছেন বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিফা নুসরাত।

মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্যোগে আব্দুর রশিদ মাস্টারকে যাত্রী ছাউনী থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেয়া হয়।

জানা গেছে, নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটগ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ (৮৮) বিভিন্ন সময়ে তিন তিনটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এরশাদ সরকারের সময় ছিলেন উপজেলা জাতীয় পার্টির দাপুটে সভাপতি। দুইবার উপজেলা পরিষদে নির্বাচন করেছিলেন এরশাদ সরকারের আমলে। বাড়ি, পুকুর চাতাল, বাগানসহ চাষাবাদের জমিও ছিল রশিদ মাস্টারের। সময়ের ব্যবধানে সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব আব্দুর রশিদ মাস্টার স্ত্রী-কন্যার কাছ থেকে বিতাড়িত হয়ে দেড় বছর আগে আশ্রয় নেন উপজেলার কুন্দারহাট বাসস্ট্যান্ড যাত্রীছাউনীতে। সেখানেই গত দেড় বছর সময় মানুষের কাছে হাত পেতে যে যা দিতেন তাই খেয়ে দিন পার করেছেন।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর বার্তা২৪.কম-এ আব্দর রশিদ মাস্টারের জীবন কাহিনী তুলে ধরা হয়। এরপর উদ্যোগ নেন নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিফা নুসরাত।


মঙ্গলবার তিনি কুন্দারহাট যাত্রী ছাউনীতে যান। এ সময় তাঁর সঙ্গে নন্দীগ্রাম পৌর মেয়র আনিসুর রহমান, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা ও ভাটগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকে আব্দুর রশিদ মাস্টারকে
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেন। ভর্তির পর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তোফাজ্জল হোসেন ও আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. ইকবাল মাহমুদ শিক্ষক আব্দুর রশিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।

ওই শিক্ষকের ফুসফুসে পানি জমেছে। এছাড়া তাঁর কোমরের হাড় ভাঙা, মানসিক সমস্যা, পানিশূন্যতা ও চর্মরোগ আছে। এসব কারণে তাঁর বেশকিছু পরীক্ষা করানো দরকার।

ইউএনও বলেন, তাঁর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি সুস্থ হয়ে উঠলে থাকার জন্যও ঘরের ব্যবস্থা করা হবে। ভালো কোন বৃদ্ধ নিবাসে যেন তাঁকে রাখা যায় সকলের কাছে সেই সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, 'বর্তমান সরকার এটি নিশ্চিত করতে চায় যে কোন মানুষই গৃহহীন থাকবে না এবং তাঁদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে। এটিও তারই অংশ। তাঁর চিকিৎসা, আবাসনসহ মানবিক সকল বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন পাশে থাকবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর