মহামারির প্রকোপেও বিকশিত লিডার্স স্কুল

, জাতীয়

কনক জ্যোতি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 09:42:12

করোনা মহামারির কিছুদিন আগে ২০১৮ সালে ছোট্ট পরিসরে চট্টগ্রামের ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন বালুছড়া এলাকায় শুরু হয় লিডার্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ। মহামারির প্রকোপে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলেও লিডার্সের বিকাশ হয়েছে অভাবনীয় গতিতে। করোনা সঙ্কটের মধ্যের বছরগুলোতে প্রায় আট শত শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখরিত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তাদের নিয়ে কাজ করছেন শতাধিক শিক্ষক ও সহায়ক স্টাফ।

লিডার্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের উল্লেখযোগ্য বিকাশ সাধিত হয়েছে কোভিদ প্রটোকল, সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মান্য করে। শিক্ষার্থীদেরও আনা হয়েছে টীকাকরণ কর্মসূচির আওতায়। অভিভাবকরা বলছেন, "এসব ছাড়াও শিক্ষার মানগত ও পরিবেশগত দিকগুলো এখানে আকর্ষণীয়। ফলে চট্রগ্রাম মহানগরের আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাতারে স্থান লাভ করেছে লিডার্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ।"

লিডার্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্বপ্নদ্রষ্টা কর্নেল (অব.) আবু নাসের মো. তোহা, যিনি চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের প্রিন্সিপাল ছিলেন। অবসর গ্রহণের পর তিনি নিজের দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে গড়ে তুলেছেন লিডার্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

বার্তা২৪.কম'কে কর্নেল (অব.) আবু নাসের মো. তোহা বলেন, "ভালো ছাত্র হওয়ার আগে একজন শিক্ষার্থীকে ভালো মানুষ করতে হবে। ভালো মানুষ হলে সে ভালো ছাত্র হবেই।"

"এজন্য আমরা অ্যাকাডেমিক পড়াশোনার সমান্তরালে নৈতিকতার শিক্ষা প্রদান করি। প্রতিটি শিক্ষার্থীকে সালাম চর্চা, ধন্যবাদ জানিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং ভুল করলে কালবিলম্ব না করেই সরি বলার অভ্যাস করানো হয়। পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি প্রতিদিন একটি ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা জাগানো হয় তাদের মধ্যে", বলেন তিনি।

স্কুলের পরিবেশও বেশ সুন্দর আর পরিপাটি। লতা, গুল্ম, ক্যাকটাস দিয়ে আচ্ছাদিত পুরো প্রাঙ্গণ। রয়েছে একটি মিনি চিড়িয়াখানা, যেখানে নানা জাতের পাখি ও উদ্ভিদ শিক্ষার্থীরা সরাসরি দেখে চিনতে পারে। প্রতিদিন সকালে স্কুলের শুরু হয় আনন্দঘন আবহে। প্রতিটি শিক্ষক উপস্থিত থেকে অভিভাবকদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের গ্রহণ করেন। পড়াশোনা, খেলাধুলা, স্বাস্থ্যবিধি এবং ভালো ও মন্দ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয় প্রতিটি শিক্ষার্থীকে। মোবাইল, টিভি আসক্তি এ কারণে লিডার্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে ঘেঁষতে পারে না। মেধা বিকাশের সৃজনশীল প্রয়াসের সঙ্গে সঙ্গে মিথ্যা, প্রবঞ্চনা, সন্ত্রাস ইত্যাদির বিরুদ্ধেও নৈতিক প্রতিরোধ তৈরি করা হয় তাদের মননে।

কর্নেল (অব.) আবু নাসের মো. তোহা বলেন, "ভালো শিক্ষার জন্য প্রয়োজন ভালো প্রতিষ্ঠান ও ভালো পারিবারিক পরিবেশ। আমরা তা নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত মতবিনিময় করি। প্রতিটি ছাত্রের সমস্যা ও সম্ভবনার দিকগুলো চিহ্নিত করে কাজ করছি আমরা। ফলে শিক্ষার্থীরা একই সঙ্গে ভালো মানুষ ও ভালো ছাত্র হিসাবে গড়ে উঠছে।"

তিনি বলেন, "অবসর গ্রহণের পর একটি দৃষ্টান্তমূলক আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার স্বপ্নময় চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ শুরু করি। মহান আল্লাহর রহমতে আমরা সামাজিক নেতৃত্ব, অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সমর্থন ও সহযোগিতা পাচ্ছি। আমরা আশা করি, শুধু চট্টগ্রামের নয়, বাংলাদেশের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় অচিরেই লিডার্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থান লাভ করবে।"

এ সম্পর্কিত আরও খবর