ভোটের বছর প্রবৃদ্ধি কমবে না: অর্থ মন্ত্রণালয়

ঢাকা, জাতীয়

আসিফ শওকত কল্লোল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 08:37:12

ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে ভোটের বছর প্রাক্কলিত মোট দেশজ উৎপাদন জিডিপি)আগের অর্থ বছরের তুলনায় কমবে না মনে করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। যদিও চলতি অর্থবছর জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের প্রথম বৈঠকে এই আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উল্লেখ করা হয়, ১৯৯০-৯১ অর্থ বছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্ষন্ত প্রতিটি নির্বাচনী বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমেছে। কিন্তু চলতি অর্থ বছরে একটা ধারাবাহিক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ফলে এ অর্থ বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে না।

অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, নির্বাচনকেন্দ্রীক অনিশ্চয়তার কারণে অনেক ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে ঋণ নেন না। ব্যাংকগুলোও ঋণ দিতে অনিহা দেখায়। নির্বাচনের আগে অর্থনীতিতে অস্থিরতা থাকে। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও কমে যায়।

কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের বৈঠক সূত্রে আরো জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে বাম্পার ফলন হওয়ায় জিডিপি’র প্রাক্কলিত প্রবৃদ্ধি কমবে না। ফলে জিডিপির প্রাক্কলিত প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ ধরে রাখা সম্ভব হবে। তবে উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ ছাড়ে নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় প্রবৃদ্ধির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, গত ২০১৪ সালের নির্বাচনী বছরে প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছিল ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ ও ২০১৩ সালে ৬ দমশিক ০১ শতাংশ। বিএনপির নির্বাচনী সংহিসতা ও হরতাল হওয়ায় টানা দুই বছর (২০১৪ ও ২০১৩) প্রবৃদ্ধি কমেছিল। কিন্তু ২০১২ সালে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬ দশমিক ৫২ শতাংশ, ২০০৮ সালে ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ, ২০০৯ সালে ৫ দশমিক ০৫ শতাংশ, ২০০০ সালে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ, ২০০১ ও ২০০২ সালে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ।

২০১২-১৩ সালে ৭ দশমিক ২ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্জিত প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ০১ শতাংশ এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৭ দশমিক ২ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রবৃদ্ধি অর্জন হয় ৬ দশমিক ১২ শতাংশ।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জা আজিজুল ইসলাম বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘নির্বাচনী সরকার ক্ষমতায় থাকলেই প্রবৃদ্ধি ভালো হবে এমন বলার সময় এখনও আসেনি। নির্বাচনের এক বছর পর এটা বোঝা যাবে। নির্বাচনের বছরে অনিশ্চয়তা থাকায় জিডিপিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এটা একটি স্বাভাবিক বিষয়। এ নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমাদের গড় জিডিপি ৭ শতাংশের ওপর আছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচনের বছরে অর্থনীতিতে একটু ভাটার টান পড়ে, এটা সত্য। এ সময় যে প্রবৃদ্ধির হার কমে যায়, সেটাও সত্য। তবে নির্বাচনের বছরে আমদানি বেড়ে যায়, এটা মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে এর পেছনে রাজনীতিকদের নির্বাচনী খরচ জোগারের একটা কৌশল।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর